ব্রিটিশ (UK) সাম্রাজ্যের সূর্য অস্তমিত গিয়েছে বহু আগেই। তবুও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ছোট ছোট একাধিক উপনিবেশ। এবার আফ্রিকার বুকে শেষ উপনিবেশ চাগোস দ্বীপপুঞ্জটুরকুও খোয়ালো ব্রিটেন। তবে স্বেচ্ছায় নয়, রীতিমতো চাপে পড়েই আত্মসমর্পন করে ব্রিটেন। ভারত মহাসাগরে মরিশাস (Maritius)থেকে হাজার মাইল দূরে দিয়েরা গার্সিয়া দ্বীপপুঞ্জের থেকে কিছুটা দূরেই অবস্থিত ছিল চাগোস (Chagos)।
চিনকে রুখতে মায়ানমারের বিদ্রোহীদের সঙ্গে জোট বাঁধছে ভারত
বিগত কয়েক শতক ধরেই এই দ্বীপের ওপর কর্তৃত্ব বজায় রেখেছিল ব্রিটেন। ভারত (India) সহ এশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে সাম্রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিত এই দ্বীপপুঞ্জ। বর্তমানে ১০০০ জনসংখ্যা বিশিষ্ট এই দ্বীপপুঞ্জে দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন তীব্রতর হচ্ছিল।
সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল আন্তর্জাতিক চাপ। রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিভিন্ন সংগঠন থেকে আন্তর্জাতিক আদালতেও ইস্যুটিকে নিয়ে মুখ পোড়ে ব্রিটেনের। ফলে ঘরে বাইরে চাপ বাড়তে থাকে লন্ডনের ওপর। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই উপনিবেশটি মরিশাসকে হস্তান্তরে সম্মত হয় ব্রিটেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী তথা লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্ট্যামারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বিরোধী কনসারভেটিবেরা। উল্লেখ্য ১৯৪৬ সালে ভারতের স্বাধীনতা আইনটিও পাশ করেছিল লেবার পার্টির নেতা ক্লিমেন্ট এটলির নের্তৃত্বাধীন সরকার।
RG kar case: সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা, জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হাইকোর্টে
তবে চাগোসকে স্বাধীন করতে নিঃশব্দে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ভারতও। স্বাধীনতার পর থেকেই প্রতিটি দেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানিয়ে এসেছে নয়াদিল্লি। সেই নীতিমতোই আন্তর্জাতিক মঞ্চে চাগোসের স্বাধীনতার দাবিকে সমর্থন জানিয়ে এসেছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি ভারত মহাসাগরে ঘনিষ্ট প্রতিবেশী দেশ মরিশাসের জন্যও দৌত্য করে মোদী সরকার। কারণ দিয়েরা গার্সিয়ার মতো মার্কিন ঘাঁটির পাশে ব্রিটিশ উপনিবেশ স্বাভাবিকভাবেই ভারত মহাসাগরে ভারতের প্রভাবকে কিছুটা হলেও ক্ষুন্ন করত। সেই কৌশলগত বিষয়টিকে চিন্তা করেই ব্রিটিশ উপনিবেশ চাগোসের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। কারণ ঐতিহাসিক কারণে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার ভুক্তভোগী ভারতসহ গোটা উপমহাদেশ।
আশিসকে তিনদিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠাল শিয়ালদহ আদালত
চাগোসের মুক্তির পর এবার বাকি শুধু সুদূর ফকল্যান্ড আইল্যান্ড। ৮০’র দশকে ফকল্যান্ড আইল্যান্ডের ওপর দখল বজায় আর্জেন্তিনার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের ব্রিটেন। যদিও ওই যুদ্ধে আর্জেন্তিনা পরাজিত হলেও ফকল্যান্ডের স্বাধীনতার দাবিতে আর্জেন্তিনাকেই সমর্থন জানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
চার দশক পর এবার চাগোসের মুক্তির পর ফের ফকল্যান্ডে নতুন করে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বিরোধী আওয়াজ জোরদার হবে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।