কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসুর (Jyoti Basu) জন্মদিন পালন তাঁর দল সিপিআইএমের বিতর্কিত নেতা সুভাষ চক্রবর্তী সূচনা করেছিলেন। বাম জমানা অবসানের পর এ রাজ্যে তৃণমূল জমানায় বিরোধী পরিসর থেকে সরে গেছে সিপিআইএম। এখন বিরোধী বেঞ্চে বিজেপি। এসব এই পট পরিবর্তনের মধ্যেও প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে বিজেপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রাজনীতি তুঙ্গে।
জ্যোতি আগুনে পুড়ছে বঙ্গ বিজেপি!
রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য প্রকাশ্যেই জ্যোতি বসুর স্তুতি করে বিতর্কিত হয়েছেন। তিনি নিজ দলের অনুষ্ঠান থেকে বলেছেন, জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তৃণমূলের হাত থেকে তার বাংলাকে বাঁচাতে একজোট হতে হবে।
জ্যোতি বসুর বাংলা- বঙ্গ বিজেপি সভাপতির মুখে প্রথমবার শোনা গেছে এমন কথা। এতদিন দলটি এই কৃতিত্ব একমাত্র দিত ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিকে। এবার তাঁর পাশাপাশি জ্যোতি বসুসহ দেশবিভাগ সমকালীন আইনসভার কমিউনিস্ট ও কংগ্রেস সদস্যদেরও ভাগীদার করেন শমীকবাবু।
শমীক ভট্টাচার্যের জ্যোতি স্তুতি উড়িয়ে প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায় সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘এক মূর্তিমান শয়তান জ্যোতি বসুর জন্মের ১১১ বৎসর পূর্ণ হল আজ। বাঙালি হিন্দু জনগোষ্ঠীতে জন্মে এই জনগোষ্ঠীকেই সর্বনাশ ও বিলুপ্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবার কাজে এই লোকটি অদ্বিতীয়।’
গেরুয়া শিবির সরগরম। সামাজিক মাধ্যমে বিজেপি সমর্থকরা প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য সভাপতি নাকি তথাগত কে ঠিক? এভাবেই বঙ্গ বিজেপির ভিতরে জ্যোতি আগুন ছড়িয়েছে।
১৯৭৭ সালে জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। সাড়ে তিন দশকের বামফ্রন্ট সরকারের সিংহভাগ সময়ে তিনিই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০০০ সালে তিন অবসর নেন। তাঁর জন্ম ১৪ সালে। তিনি প্রয়াত হন ২০১০ সালে। তাৎপর্যপূর্ণ, তাঁর প্রয়াণের পরের বছর ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়।
বাম জমানার পতনের পর থেকে সিপিআইএম ক্রমে প্রান্তিক শক্তিতে পরিনত হয়েছে। বঙ্গ কিংবা জাতীয় রাজনৈতিক আলোচনায় জ্যোতি বসু বিশেষ প্রাসঙ্গিক। তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে প্রধানমন্ত্রী হননি। ভারতরত্ন উপাধি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এদিন সিপিআইএমের তরফে প্রয়াত জ্যোতি বসুর নামে গবেষণা কেন্দ্রে একটি অনুষ্ঠান হয়। এতে অংশ নেন দলটির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুসহ অন্যান্য নেতৃত্ব ও গুণীজন।