পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে আরেকটি বিতর্কের ঝড় উঠেছে (BJP-Leader)। ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)-র প্রাক্তন এসসি সেল রাজ্য কমিটির সদস্য হরিওম বাল্মিকির বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলেরই এক নেত্রীর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনা বিজেপির অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা এবং দলের সততার দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে, দাবি করে যে বিজেপি নিজেদের ঘর সামলাতে ব্যর্থ হলেও বাংলা শাসনের স্বপ্ন দেখছে।
ঘটনার বিবরণ
২০২৫ সালের জুন মাসে, (BJP-Leader) হরিওম বাল্মিকি, যিনি বিজেপির এসসি সেলের রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন, দলের এক মহিলা কর্মীকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয়, “চাকরির নামে দলের নেত্রীকেই প্রতারণা! হরিওম বাল্মিকি, প্রাক্তন বিজেপি এসসি সেল রাজ্য কমিটির সদস্য, এক লক্ষ টাকা নিয়ে কোনও চাকরি দেননি, শুধু প্রতারণা করেছেন।
এটাই বিজেপির চরিত্র।” (BJP-Leader) পোস্টে আরও বলা হয়, “বিজেপি নিজেদের ঘর পরিষ্কার রাখতে পারে না, অথচ বাংলা শাসনের স্বপ্ন দেখে? বিজেপির সততার প্রচার সবচেয়ে বড় রসিকতা।” এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও পুলিশ বা অন্য কোনও সরকারি সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তৃণমূলের এক্স পোস্ট অনুসারে,(BJP-Leader) হরিওম বাল্মিকির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগকারী মহিলা কর্মী, যিনি বিজেপির স্থানীয় স্তরের নেত্রী, দাবি করেছেন যে হরিওম তাকে চাকরির জন্য প্রভাবশালী যোগাযোগের কথা বলে টাকা নিয়েছেন, কিন্তু কোনও চাকরি প্রদান করেননি।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া (BJP-Leader)
বিজেপি (BJP-Leader) এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হরিওম বাল্মিকির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। দলের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হরিওম বাল্মিকি গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দলের কোনও সক্রিয় কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত নন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা এই ধরনের অভিযোগের তীব্র নিন্দা করি। দোষী প্রমাণিত হলে তিনি কঠোর শাস্তি পাবেন। তবে, এটি দলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা ঢাকতে এই ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করছে।”
একই সঙ্গে, বিজেপির স্থানীয় নেতা অরূপ দাস জানান, হরিওম বাল্মিকির সঙ্গে দলের কোনও সরাসরি যোগাযোগ নেই এবং তিনি দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন না। তবে, তৃণমূলের অভিযোগ, হরিওম বাল্মিকি বিজেপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে ছবিতে দেখা গেছে, যা দলের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাকে প্রকাশ করে।
তৃণমূলের আক্রমণ
তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনাকে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেলে (BJP-Leader) পোস্ট করা হয়েছে, “বিজেপির নেতা নিজের দলের কর্মীকেই ঠকিয়েছেন। এটাই বিজেপির সংস্কৃতি।”
তৃণমূল নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপি সততার কথা বলে, কিন্তু তাদের নেতারা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে বিজেপি বাংলার জনগণের আস্থা অর্জনের যোগ্য নয়।” তিনি আরও দাবি করেন, বিজেপির অভ্যন্তরে এই ধরনের প্রতারণা নতুন নয়, এবং দলের নেতারা প্রায়ই এমন কাজে জড়িত থাকেন।
রাজনৈতিক প্রভাব
এই ঘটনা (BJP-Leader) পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সম্প্রতি কলকাতার সাউথ কলকাতা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে নারী নিরাপত্তার প্রশ্নে আক্রমণ শানিয়েছিল।
কিন্তু হরিওম বাল্মিকির এই প্রতারণার অভিযোগ বিজেপির নৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির জন্য একটি ধাক্কা হতে পারে। তৃণমূল এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির সততা এবং নির্ভরযোগ্যতার প্রশ্ন তুলছে।
জনগণের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। একজন স্থানীয় বাসিন্দা, রীতা মণ্ডল, বলেন, “বিজেপি সততার কথা বলে, কিন্তু তাদের নেতারা এমন কাজ করছেন। এটা আমাদের আস্থা নষ্ট করে।” অন্যদিকে, বিজেপি সমর্থকদের একাংশ এই অভিযোগকে তৃণমূলের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
অফিস টাইমে ট্রাফিক জ্যামে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে কলকাতা
আইনি পদক্ষেপ
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হরিওম বাল্মিকির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় (প্রতারণা) এবং ৪০৬ ধারায় (আস্থাভঙ্গ) মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এবং পুলিশ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে। তবে, এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের ফলাফল এখনও প্রকাশিত হয়নি।
হরিওম বাল্মিকির বিরুদ্ধে উঠে আসা এই প্রতারণার অভিযোগ বিজেপির জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির সততা এবং নৈতিক অবস্থানের প্রশ্ন তুলছে। আগামী দিনে এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নির্ভর করবে তদন্তের ফলাফল এবং দুই দলের রাজনৈতিক কৌশলের উপর।