বিজেপির রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) পুলিশের দ্বারা ‘হেনস্থা’ করার প্রতিবাদে বাঁকুড়ার ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছেন। এই অবরোধের ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বিজেপির নেতা-কর্মীরা দলের পতাকা হাতে নিয়ে হোর্ডিং ও পোস্টার সমেত সড়কে অবরোধে বসে পড়েন, প্রতিবাদ জানান।
অমরনাথ শাখার অভিযোগ, ‘‘আগে তৃণমূল বিরোধী দলনেতাকে বাধা দিত, কিন্তু এখন পুলিশও বিরোধী দলনেতাকে বাধা দিতে নেমেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ধরনের হেনস্থার প্রতিবাদে আজ আমরা এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি। অবিলম্বে এই ধরনের আচরণ বন্ধ না হলে আগামীদিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’ এদিকে, বিজেপি নেতা-কর্মীদের এই বিক্ষোভ দেখে এলাকায় ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।
প্রসঙ্গত, এই প্রতিবাদ শুরু হওয়ার পেছনে রয়েছে সোমবার হাওড়ার বেলগাছিয়া এলাকায় শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) এবং বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের একটি ঘটনা। ওইদিন দুপুরে, শুভেন্দু অধিকারী হাওড়ার বেলগাছিয়ায় ঘরহারা মানুষের সাথে দেখা করতে যান। তবে, পুলিশ ওই এলাকায় আগে থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল। শুভেন্দু যখন ওই এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেন, তখন পুলিশ তাঁদের বাধা দেয় এবং তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এসময়, পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু, ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ঘটনার সময়, বিজেপি নেতা-কর্মীদের দাবি, শুভেন্দুর হাত কেটে যায় এবং রক্ত বের হতে থাকে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অভিযোগ করেন, গোলাম মুস্তার্জা নামে এক এসআই তাঁকে আঘাত করেন। এই আঘাতের কারণে তাঁর হাত থেকে রক্ত বের হতে শুরু করে, যা তিনি মিডিয়াকে দেখিয়েছিলেন। এই ঘটনা ঘটার পর, বিজেপি প্রতিনিধি দল হতাশ হয়ে বিধানসভায় ফিরে আসেন। সেখানেই শুভেন্দুর হাতে ব্যান্ডেজ করা হয়।
এই ঘটনার পরেই বিজেপির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয় এবং দলীয় নেতারা পুলিশি আচরণের বিরুদ্ধে নিন্দা জানান। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হেনস্থা। পুলিশ সরকারি দলের নির্দেশে কাজ করছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি এমন আচরণ গণতান্ত্রিক দেশের পক্ষে অসম্মানজনক।’’
এছাড়াও, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়েছে, এই ঘটনার বিরুদ্ধে তারা রাজ্যব্যাপী আন্দোলন শুরু করবেন। দলের নেতারা বলছেন, ‘‘যখন বিরোধী দলনেতা এবং তার সহকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে যান, তখন তাদের উপর আঘাত করা মেনে নেওয়া যায় না।’’
এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় কোনো মন্তব্য করা হয়নি, তবে দলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি, পুলিশ শুধুমাত্র আইন রক্ষা করতে কাজ করেছে।’’
এবার, বিজেপির এই আন্দোলন এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।