অমিত শাহ ভালভাবেই জানেন উত্তরবঙ্গ আলাদা করা কঠিন: অশোক ভট্টাচার্য

উত্তরবঙ্গ আলাদা করার দাবি পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপির ‘ধোঁকাবাজি’ (separation of north bengal) প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা মানছে তৃণমূলও! স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অবস্থানও…

  • উত্তরবঙ্গ আলাদা করার দাবি পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপির ‘ধোঁকাবাজি’ (separation of north bengal)
  • প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা মানছে তৃণমূলও!
  • স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অবস্থানও অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে মিলছে

আলাদা হবে উত্তরবঙ্গ ? পশ্চিমবঙ্গের ৮টি জেলা, বিহার ও অসমের কিছু এলাকা নিয়ে নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হবে ? এমনই জল্পনা বেড়েছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির (BJP) উত্তরবঙ্গের বিধায়ক, সাংসদ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীত প্রামানিকের ইঙ্গিতে।

ফের বঙ্গভঙ্গ? এমনই রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। তাৎপর্যপূর্ণ, রাজ্য ভাগের দাবিতে সরব গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসেসিয়েশন (GCPA) নেতা অনন্ত মহারাজকে উপহার পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপহার পাওয়ার পর রাজ্য ভাঙার পক্ষে আরও জোরালো অবস্থান রেখে অনন্তর দাবি, আলাদা হচ্ছেই উত্তরবঙ্গ। কেন্দ্র সরকারও তৈরি। মুচকি হেসে একমাস সময় দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। 

রাজ্য ভাঙছে আলাদা উত্তরবঙ্গ তৈরি হচ্ছে এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও রাজ্য সিপিআইএমের শীর্ষ নেতা অশোকবাবু এক সময় টানা সাড়ে তিন দশকের বামফ্রন্ট আমলে ‘উত্তরবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী’ বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচিত হতেন। তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন উত্তরবঙ্গ ভাঙবে না।

সিপিআইএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির দৈনিক মুখপত্র ‘গণশক্তি’ প্রকাশ করেছে অশোক ভট্টাচার্যের লেখা বিশেষ উত্তরসম্পাদকীয় (post editorial)- ‘বিজেপি-তৃণমূলের উত্তরবঙ্গে হাওয়া গরম করার রাজনীতি‘। এতে প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য লিখেছেন, ‘অমিত শাহ বা কেন্দ্রীয় সরকার ভালভাবেই জানেন উত্তরবঙ্গ বা কোচবিহারকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলে ঘোষণা করাটা কঠিন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় অনুমোদন না করিয়ে কখনও রাজ্য ভাগ করা যায় না।’

অশোক ভট্টাচার্যের যুক্তি, কেন্দ্র যদি এককভাবে পারত তা হলে বহুদিন আগেই দার্জিলিঙ নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠন করে দিত। কিন্তু তা পারেনি। যদিও ভোট এলেই বিজেপি পৃথক রাজ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে বিজয়ী হবার চেষ্টা করে থাকে। যদিও পাহাড়ের মানুষ বিজেপির ধোঁকাবাজি ও চালাকির রাজনীতি এখন ধরে ফেলেছে। কোচবিহার বা উত্তরবঙ্গ নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কথা প্রচারও এই অঞ্চলে বিজেপির চালাকির রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়।’

এই প্রতিবেদনে অশোক ভট্টাচার্য সরাসরি রাজ্যের শাসকদল তৃ়ণমূল কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘উত্তরবঙ্গে বিজেপির হাওয়া গরমের রাজনীতির সাথে তৃ়ণমূল কংগ্রেস দলের রাজনৈতিক স্বার্থের রাজনীতি যুক্ত।’

এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বারবার দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ আলাদা করার। তবে তাঁর দাবি উড়িয়ে দিয়েছে খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সারা দেশেই রাজ্য ভাগের জন্য একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু রাজ্যের বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ না হলে কিছু করার নেই।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অবস্থানের পর দেখা যাচ্ছে সিপিআইএম নেতা ও প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের যাবতীয় যুক্তি অকাট্য।