হোলি-নামাজ বিতর্কে যোগীকে ‘তিস মার খান’ বলে আক্রমণ অখিলেশের

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে “তিস মার খান” আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে “ত্রিশ”…

Akhilesh Yadav on CM Yogi

short-samachar

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে “তিস মার খান” আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে “ত্রিশ” সংখ্যার প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা রয়েছে, কারণ তিনি প্রায় প্রতিটি ঘটনায় এই সংখ্যা ব্যবহার করেন।

   

এদিন অখিলেশ যাদব বলেছেন, “হোলি উৎসবের আগে উত্তর প্রদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। মুসলিম সম্প্রদায়ের মসজিদগুলোকে কেন তাপালিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হলো? এই সবকিছুর জন্য মুখ্যমন্ত্রী দায়ী। তিনি শুধু ৩০ সংখ্যাটির প্রতি ভালোবাসা দেখান। ৩০ জন মানুষের মৃত্যুর খবরও তিনি জানান ৩০ কোটি টাকা আয়-ব্যয়ের কথা বলেন, কিন্তু তিনি কখনো হিসাব দেন না।

এই মন্তব্যটি অখিলেশ যাদবের প্রতিক্রিয়া ছিল, যখন স্থানীয় প্রশাসন হোলি উৎসবের আগে অনেক মসজিদে তাপালিন শিট দিয়ে ঢেকে দিয়েছে। প্রশাসনের এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল হোলি উদযাপনের সময় কোনও অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্ভাবনা কমানো এবং সমাজের মধ্যে শান্তি বজায় রাখা।

আখিলেশ যাদব আরও উল্লেখ করেছেন, “আমি দেশবাসীকে হোলির শুভেচ্ছা জানাই। হোলি হলো রঙের উৎসব, যা আনন্দ এবং সুখ নিয়ে আসে। আমাদের দেশের গঙ্গা-যমুনা ঐতিহ্য যেন এভাবেই বজায় থাকে, এবং মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে উৎসব উদযাপন করে, তা আমরা প্রত্যাশা করি। আমাদের দেশে সব সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রে উৎসব পালন করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “তবে বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী যোগীর সিদ্ধান্তের কারণে আমরা এই ঐতিহ্য রক্ষায় সংকট অনুভব করছি। হোলি এবং নামাজের বিষয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তার ‘তিস মার খান’ মনোভাবের মাধ্যমে দেশের ঐক্যকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে আক্রমণ করে অখিলেশ যাদব আরও বলেন “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়াগরাজে যুবকরা তাদের বাইকে চাকরি পেয়েছে। যদি এটি সত্যি হয় তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে কখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ব্যক্তিগত যানবাহনকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হবে?”

তিনি বলেন “বিজেপি এখন মিথ্যাচারের পথ অনুসরণ করছে। তারা প্রতিটি নির্বাচনে একে অপরকে সহায়তা করছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তারা পরাজিত হয়েছে, এবং ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তারা আরও বড় বিপর্যয়ে পড়বে।”

বুলডোজার কার্যক্রম নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অখিলেশ যাদব বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট বার বার নির্দেশ দিয়েছে, কিন্তু সরকার সেগুলি মেনে চলেনি। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল গরিবদের উপর অত্যাচার করা। আমার আশা, সুপ্রিম কোর্ট একদিন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে, এবং তারা দেখছে যে এই সরকার সংবিধান এবং মানুষের অধিকারের প্রতি যত্নশীল নয়।”

অখিলেশ যাদব বলেছেন, “বিজেপি সরকার ২০২৭ সালের নির্বাচনে বিশাল পরাজয় দেখবে। জনগণের সমর্থন তাদের থেকে সরে গেছে এবং এর পরিণতি তারা একদিন অবশ্যই ভোগ করবে।”

বৃহস্পতিবারের সভায় তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বলেন, “এটি কোনো সাধারণ রাজনৈতিক এজেন্ডা নয়, দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা। আমরা চাই যে সমস্ত সম্প্রদায় একসাথে উৎসব উদযাপন করুক, আর বিজেপি যেন এর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি না করে।”