বিজেপি যমুনার দূষণ নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি, অভিযোগ আপের

বৃহস্পতিবার আম আদমি পার্টির নেতারা বিজেপির সদর দফতরে একটি বিশেষ প্রতিবেদন নিয়ে হাজির হয়েছেন। প্রতিবেদনে তারা অভিযোগ করছেন যে, হরিয়ানা থেকে আসা যমুনা নদীর জল…

বৃহস্পতিবার আম আদমি পার্টির নেতারা বিজেপির সদর দফতরে একটি বিশেষ প্রতিবেদন নিয়ে হাজির হয়েছেন। প্রতিবেদনে তারা অভিযোগ করছেন যে, হরিয়ানা থেকে আসা যমুনা নদীর জল দূষিত এবং এতে অ্যামোনিয়ার উপাদান রয়েছে। আপ দাবি করছে যমুনা নদীর জলের ৭ অংশে অ্যামোনিয়া তৈরি হয়েছে। যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

এই বিষয়ে আপ-এর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে বিজেপি সরকার যমুনা নদীর জল অ্যামোনিয়া স্তরের বৃদ্ধি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। যা দিল্লির জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যমুনা নদী দিল্লির জল সরবরাহের অন্যতম প্রধান উৎস এবং নদীর দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছে আপ।

   

এই অভিযোগের পর একটি রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। যেখানে আপ বিজেপি-কে তীব্র সমালোচনা করছে। অন্যদিকে ভারতের নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কেজরিওয়াল যমুনার জল “বিষাক্ত” বলে মন্তব্য করেছিলেন। এবং তা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন হতে পারে বলে কমিশন কেজরিওয়ালকে আরেকটি সুযোগ দিয়েছে তার মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য।

কমিশন কেজরিওয়ালকে জানিয়েছে তার মন্তব্যের ফলে যদি সাম্প্রদায়িক অশান্তি বা দলের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। তবে তাকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে। কমিশন কেজরিওয়ালকে অবিলম্বে তথ্য জমা দিতে বলেছে। যার মধ্যে যমুনা নদীতে বিষাক্ত পদার্থের ধরন, পরিমাণ তা বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে। কেজরিওয়ালকে এই তথ্য শুক্রবার সকাল ১১টার মধ্যে কমিশনকে জমা দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে পরিষ্কার ও নিরাপদ জল প্রাপ্যতা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শাসন ব্যবস্থা বিষয় এবং সব সরকারকে নাগরিকদের জন্য নিরাপদ জল নিশ্চিত করার বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে। কমিশন আরও জানিয়ছে যে যমুনা নদীর দূষণ এবং জল ভাগাভাগি নিয়ে বহু বছর ধরে চলমান বিবাদ থাকলেও, এটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ দ্বারা সমাধান হওয়া উচিত এবং নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী সময়ে এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।

এদিকে কেজরিওয়াল অভিযোগ করেছেন যে, হরিয়ানা সরকার যমুনা নদীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিষাক্ত করেছে। তার এই মন্তব্যের পর বিষয়টি এখন তদন্তাধীন রয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যমুনা নদীর দূষণ এবং জল মানের অবনতির বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক বিতর্কের বিষয় নয়, বরং এটি একটি গুরুতর পরিবেশগত সমস্যা। দিল্লির বাসিন্দাদের জন্য পরিষ্কার জল প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিত, এবং এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এই বিতর্ক নিয়ে আপ ও বিজেপির মধ্যে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে উঠেছে। এবং যমুনার দূষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।