সোজা পথে চলে না বিমান, কারণ জানলে অবাক হবেন

বিমানের (Flight) উড়ান পথগুলো সাধারণত সোজা না হয়ে বাঁকা হয়, কারণ পৃথিবী বৃত্তাকার (গোলাকার) এবং বিমানের উড়ান পথে ‘গ্রেট সার্কেল রুট’ বা ‘মহাগোলক রুট’ অনুসরণ…

An airplane flying over a curved path on a world map, illustrating the science behind why airplanes don't fly in a straight line

বিমানের (Flight) উড়ান পথগুলো সাধারণত সোজা না হয়ে বাঁকা হয়, কারণ পৃথিবী বৃত্তাকার (গোলাকার) এবং বিমানের উড়ান পথে ‘গ্রেট সার্কেল রুট’ বা ‘মহাগোলক রুট’ অনুসরণ করা হয়।

গ্রেট সার্কেল রুট এমন এক রুট যেখানে পৃথিবীর বৃত্তের কেন্দ্র দিয়ে সবচেয়ে ছোট পথ তৈরি হয়। এটি পৃথিবীর বৃত্তের মতো কনভেক্স বা ভাঁজানো অংশে উড়ে চলে, যেটি দেখলে সোজা মনে হলেও পৃথিবীর বক্রতার কারণে এটি আসলে সবচেয়ে কম দূরত্বে পৌঁছানোর পথ।

   

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে সরাসরি উড়ে যান, আপনার পথ সাধারণত একটু বাঁকানো হয়ে যাবে, কারণ এটি পৃথিবীর বক্রতার উপর ভিত্তি করে গ্রেট সার্কেল রুট অনুসরণ করবে। এই রুটটি বাস্তবিকভাবে সোজা পাথের থেকে অনেকটা ছোট এবং দ্রুত।

কারণগুলো:
1. পৃথিবীর গোলাকার আকৃতি: পৃথিবী যদি সোজা থাকতো, তখন সোজা পথে যাওয়া সম্ভব হত, কিন্তু গোলাকার পৃথিবীর কারণে সোজা পথটি বড় হয়ে যায়। গ্রেট সার্কেল রুট কম দূরত্বে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
2. দ্রুততম পথ: গ্রেট সার্কেল রুট পৃথিবীকে কেন্দ্র করে কম ভ্রমণযোগ্য দূরত্ব তৈরি করে, তাই বিমানের জ্বালানি সাশ্রয়ী হয় এবং যাত্রা সময় কমে।
3. বায়ুমণ্ডলীয় এবং পরিবেশগত কারণ: কিছু রুট বায়ুর গতির কারণে আরও উপযুক্ত হতে পারে, যেমন প্যাসাট উইন্ড এবং বিমানকে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখতে সাহায্য করতে পারে।

এছাড়া, আকাশযাত্রায় বিমানটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উচ্চতায় উড়তে পারে এবং বিভিন্ন বাতাসের গতির ওপর নির্ভর করে, যা কখনও কখনও উড়ান পথ বাঁকা হতে সাহায্য করে।

উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে ভারত থেকে আমেরিকার বিমান যাত্রা করলে তখন প্রায় সমস্ত বিমান নর্দান হেমিস্ফিয়ার রাশিয়ার হয়ে ইউরোপের উপর দিয়ে অতিক্রম করে। তার প্রধান কারণ হলো বিমান তার যাত্রাপথে সম্ভাব্য বিমানবন্দরের ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। যাতে কোনরকম দুর্ঘটনা সম্মুখীন হলে জরুরি অবস্থায় বিমান অবতরণ করা যায়। অর্থাৎ প্রধান কারণ হলো বিমানের যাত্রাপথ বিপদমুক্ত করার জন্য স্থল ভাগের উপর দিয়ে হয়। এক্ষেত্রে বিমানে যাত্রা পথ যতটা সম্ভব আটলান্টিক মহাসাগরকে এড়িয়ে চলে। একইভাবে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলিতে যাওয়ার সময় বিমান উত্তর আমেরিকা হয়ে স্থল ভাগ অতিক্রম করে যাত্রা করে।

জাহাজ চলাচল করার ক্ষেত্রে কম নটিক্যাল মাইল অতিক্রম করার জন্য সাধারণত বিষুব রেখাকে এড়িয়ে উত্তর গোলার্ধের সর্বোচ্চ উত্তর বা দক্ষিণ গোলার্ধের সর্বনিম্ন দক্ষিণ দিক দিয়ে যাতায়াত করে তবে এ ক্ষেত্রেও সমুদ্রের সম্ভাব্য বিপদগুলো অর্থাৎ যেখানে ঢেউয়ের উচ্চতা বেশি সেই স্থানগুলো জাহাজ এড়িয়ে চলে।