HomeBusinessTata Sumo গাড়ির নামের নেপথ্য কাহিনি

Tata Sumo গাড়ির নামের নেপথ্য কাহিনি

- Advertisement -

হয়তো অনেকেরই জানা নেই, যে টাটা গ্রুপের প্রথম মাল্টি-ইউটিলিটি গাড়ি TATA Sumo-র সঙ্গে জাপানি হেভিওয়েট কুস্তিগীরদের কোনও সম্পর্ক ছিল না৷ পরিবর্তে টাটা মোটরসের কর্তা সুমন্ত মুলগাওকারের ( যিনি ভারত সরকার কর্তৃক তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষণে ভূষিত হয়েছিলেন) অবদানের কথা মাথায় রেখে এমন নামকরণ করা হয়েছিল গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে।

টাটা হল একটি ভারতীয় ব্র্যান্ড যার জাগুয়ার এবং রেঞ্জ রোভারের মতো পণ্য রয়েছে এবং এটি ভারতীয় গাড়ি উত্পাদন এবং অটো শিল্পকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে গিয়েছে । ১৯৯০ সালে যখন TATA Sumo এসেছিল , তখন টাটা মোটরস TELCO নামে পরিচিত ছিল।  TELCO হল টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি ।

   

এদিকে , এখন যদি আপনি কাউকে জিজ্ঞাসা করেন , তাহলে তিনি অনুভব করবেন যে গাড়ির আকার , রুক্ষতা এবং শক্তি দেখে টাটাদের এই গাড়ির নাম সুমো রাখা হয়েছে। কারণ সুমোর আসল অর্থ হল কুস্তির জাপানি রূপ এবং সুমো হল কুস্তিগীর । অর্থাৎ যারা মোটা এবং তাদের শরীর বিশাল ও তারা অনেক শক্তিশালী । আর এই মুলগাওকার ছিলেন টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানির ( টেলকোর) সিইও , টাটা স্টিলের ভাইস-চেয়ারম্যান ৷

কেন তাঁর কথা মাথায় রেখে গাড়িটির এমন নাম রাখা হল তার পিছনে একটি আকর্ষণীয় কাহিনি রয়েছে ৷ এক সময় দেখা যাচ্ছিল সুমন্ত মুলগাওকর দুপুরের লাঞ্চের সময় অফিস থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন এবং লাঞ্চের পর আবার ফিরে আসছিলেন । স্বভাবতই শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট কিছুটা আশ্চর্য হয়েছিল কেন তিনি দুপুরের খাবারের সময় অফিসে অনুপস্থিত থাকছিলেন ৷ এমনকি সন্দেহ করা হচ্ছিল টাটার কিছু ডিলাররা তাঁকে হয়তো পাঁচ তারা হোটেলে লাঞ্চ খাওয়ায় তাই তিনি ওই সময় অফিসে বসে দুপুরের খাবার না খেয়ে বাইরে বেরিয়ে যান ৷ শুধু সন্দেহ নয় , ওই সময় তার কার্যকলাপের উপর নজর রাখতে লুকিয়ে তার উপর গোয়েন্দাগিরি শুরু করে ছিল শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট । এজন্য শীর্ষ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ওই সময় তিনি কোথায় যাচ্ছেন তা জানতে তাণর পিছু নেওয়া করা শুরু করে ৷

তা করতে গিয়ে দেখা যায় – আদৌ কোনও পাঁচ তারা হোটেলে তিনি যাচ্ছেন না ৷ শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট জানতে পারে তিনি লাঞ্চের সময় বেরিয়ে চলে যান হাইওয়ের কোনও ধাবায় ৷ আর সেখানে বসে খাবার খেতে খেতে ট্রাক ড্রাইভারদের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে চান তাদের উৎপাদিত গাড়ির দোষ ত্রুটি ৷ ওই সব গাড়ি চালকদের সঙ্গে আলোচনা করে বুঝে নিতে চান গাড়ির মান উন্নয়ন করতে হলে কি কি করতে হবে অর্থাৎ ওই সব চালকেরা কেমন গাড়ি চাইছেন ৷ সেইসব কথা নোট করে এনে তিনি উন্নয়ন ও গবেষণা বিভাগের লোকেদের কাছে তা জানান , যাতে ওই ভাবে গাড়ির মান উন্নয়ন করা সম্ভব ৷ এটাই ছিল সুমন্ত মুলগাওকারের সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান যা টাটা গ্রুপকে তার তালিকায় থাকা যানবাহন এবং পণ্যগুলি উদ্ভাবন, উন্নতি এবং উন্নত করতে সাহায্য করেছিল ।

সুমন্ত মুলগাওকারের কাজের নীতি এবং অবদানকে সম্মান জানাতে টাটা মোটরস যথাযথভাবে তার নাম ও পদবীর ( Sumant Moolgaokar) প্রথম দুটি করে অক্ষর ( Su এবং Mo ) ব্যবহার করে তাদের প্রথম মাল্টি-ইউটিলিটি গাড়ি TATA Sumo-র নামকরনে ৷ যা অবশ্যই কর্পোরেট ইতিহাসে একটি অতুলনীয় স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ।

১৯০৬ সালে ৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন সুমন্ত মুলগাওকার ৷ লন্ডন থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নিয়ে তিনি সিমেন্ট শিল্পে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন । কিন্তু কয়েক বছর পরে তিনি যোগ দেন টাটা ইন্ডাস্ট্রিজ , A.C.C. সিমেন্ট , এবং টাটা লোকোমোটিভ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পরিচালক হিসেবে । এরপর তিনি টাটা স্টিলের ভাইস-চেয়ারম্যান এবং টাটা এক্সপোর্টসের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । শীঘ্রই তিনি টাটা কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্সের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন , রাঁচির পরিচালক নিযুক্ত হন।

তার দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ , ভারত সরকার তাকে পরিকল্পনা কমিশনের জাতীয় পরিকল্পনা কাউন্সিলের সদস্য , ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাপাসিটি এবং সার্ভে কমিটির চেয়ারম্যান , গভর্নমেন্ট হাউজিং ফ্যাক্টরি এবং মেশিন টুলস ডেভেলপমেন্ট কমিটির সদস্য নিযুক্ত করেছিল । তাঁকে পদ্মভূষণে ভূষিত করার পাশাপাশি তিনি অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সমন্বয় মন্ত্রকের উপদেষ্টা মনোনীত হন ৷ মূলগাওকার 1989 সালের জুলাই মাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।

- Advertisement -
Business Desk
Business Desk
Stay informed about the latest business news and updates from Kolkata and West Bengal on Kolkata 24×7
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular