একটা সময় মানুষ নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, নিজেদের চাহিদার প্রয়োজনে মানুষ ছড়িয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে। উন্মোচন করেছে এই বিশ্বের বহু রহস্য। তবে রহস্য উন্মোচন হয়নি আন্টার্টিকা নিয়ে। মানুষের বিশ্বাস সাদা বরফের আস্তরণের নিচে লুকিয়ে আছে আর এক বিশ্ব। এই ভূখন্ড নিয়ে লেখা হয়েছে উপন্যাস। সেই দাবির সত্যতা খুঁজে পেয়েছে বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচে রয়েছে বিশাল এই ভূখণ্ড। পাহাড় আর উপত্যকায় ঘেরা বিশাল এ ভূখণ্ড কয়েক লাখ বছর ধরে অ্যান্টার্কটিকা (Antarctica) বরফের নিচে ঢাকা পড়ে আছে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, ৩২ হাজার বর্গকিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত ভূখণ্ডটি একসময় গাছ, বন ও নানা ধরনের প্রাণীর আবাসস্থল ছিল। সময়ের পরিক্রমায় একসময় পুরো ভূখণ্ডই বরফে ঢেকে যায়, যা আজও বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। সেই হিসাবে নতুন আবিষ্কার হওয়া ভূখণ্ড সুন্দরবনের তিন গুণের বেশি বড়। এমনকি ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামের (আয়তন ৩০ হাজার ৬৮৯ বর্গকিলোমিটার) চেয়ে আকারে বড় এই ভূখণ্ড।
ধারণা করা হচ্ছে যে ৩ কোটি ৪০ লাখ বছরের বেশি সময় ধরে এ এলাকায় মানুষের পা পড়েনি। এ বিষয়ে ব্রিটেনের ডারহাম ইউনিভার্সিটির হিমবাহ বিশেষজ্ঞ ও গবেষক দলের প্রধান স্টুয়ার্ট জেমিসন বলেন, নতুন আবিষ্কৃত ভূখণ্ড এখনো কারও নজর পড়েনি। সাদা বরফের বিশাল এলাকার নিচে ঢাকা পড়ে আছে এই ভূখণ্ড।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য এই ভূখণ্ড আবিষ্কারের জন্য নতুন কোনো গবেষণা পরিচালনা করেননি, আগে থেকে সংগ্রহ করা পুরোনো তথ্যগুলোই নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে পর্যালোচনা করেছেন তাঁরা। সাধারণত পূর্ব অ্যান্টার্কটিক এলাকায় বরফের নিচে কী রয়েছে, তা জানার জন্য উড়োজাহাজ থেকে বেতার তরঙ্গ পাঠানো হয়। এরপর তরঙ্গগুলোর প্রতিধ্বনি বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা নেওয়া হয়। নতুন এ গবেষণায় স্যাটেলাইট ইমেজ ও রেডিও-ইকো সাউন্ডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, নতুন ভূখণ্ডটি বরফের দুই কিলোমিটারের বেশি গভীরে অবস্থিত।