৫০০০ টনেরও বেশি মহাজাগতিক ধূলিকণা প্রতি বছর ভূপৃষ্ঠে জমা হয়!।এক গবেষণায় দেখা গেছে, পাঁচ হাজার টনেরও বেশি মহাজাগতিক ধূলিকণা প্রতি বছর পৃথিবীতে জড়ো হয়। এইসব ধূলিকণা আসে ধূমকেতু ও গ্রহাণুদের থেকে।৭০০ মাইক্রোমিটারের (যেখানে চুলের ব্যাস ৭০ মাইক্রোমিটার) থেকে ছোট আকারের মাইক্রোমেটিওরাইটস কণা বায়ুমণ্ডল পেরিয়ে পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছে যায়। এই মহাজাগতিক ধূলিকণা বায়ুমণ্ডল ভেদ করে এগিয়ে আসে। বড় মেটিওরাইটস ক্ষেত্রে আমরা উল্কাবৃষ্টি হতে দেখি। আর অতিক্ষুদ্র আকারে মাইক্রোমেটিওরাটস চিরকালই আমাদের গ্রহে এসে পড়ছে। তারা বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে এসে আমাদের গ্রহের মাটিতে এসে পড়ে। এসবই ধুলো।
২০ বছরের বছর ধরে চলা আন্তর্জাতিক স্তরে গবেষণার মধ্যে দিয়ে ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চ, প্যারিস-সাক্লে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচলার হিস্ট্রি, ফ্রেঞ্চ পোলার ইনস্টিটিউটের সাহায্যে নির্ণয় করেছে যে কি পরিমাণ কণা মাটি পর্যন্ত পৌঁছয়। এই অতিক্ষুদ্র কণা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে গত দু’দশক ধরে সিএনআরএস-এর গবেষক জাঁ দুপ্রাতের নেতৃত্বে ছয়টি অভিযান চালান। এই অভিযান চলে ফরাসি-ইতালীয় কনকর্ডিয়া স্টেশনে (ডোম সি), যা আন্টার্কটিকার মাঝখানে অ্যাডেলি ল্যান্ড উপকূল থেকে ১১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ।
আইবিএম পৃথিবীর ধূলো প্রায় না থাকার জন্য এবং এবং বরফ জমার পরিমাণ কম হওয়ায়, ডোম সি হল মহাজাগতিক ধূলিকণা সংগ্রহ করার আদর্শ জায়গা। এই অভিযানে পর্যাপ্ত মহাজাগতিক কণা সংগ্রহ করা হয় (২০ থেকে ২০০ মাইক্রোমিটার আকারের), যেখান থেকে তাদের বার্ষিক পরিমাণ মাপা যায় এবং তার থেকে বোঝা যায় পৃথিবীতে প্রতি বর্গমিটারে প্রতি বছর কি পরিমাণ এই ধরণের কণা জমা হচ্ছে ।এই গবেষণার ফলাফল যদি গোটা গ্রহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, তাহলে দেখা যাচ্ছে যে প্রতি বছর জমা হওয়া মাইক্রোমেটিওরাইটস পরিমাণ প্রায় ৫২০০ টন। নীল গ্রহে জমা হওয়া মহাজাগতিক পদার্থের এটাই মূল উৎস।
আকারে বড় বস্তু, যেমন উল্কার থেকে এদের পরিমাণ অনেক বেশি,যেখানে উল্কা থেকে জমা হয় বছরে ১০ টনেরও কম ।মাইক্রোমেটিওরাইটের স্রোতকে বৈজ্ঞানিক সম্ভাবনার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ কণা সম্ভবত ধূমকেতু থেকে আসছে (৮০ শতাংশ), আর বাকিটা গ্রহাণু থেকে। পৃথিবী সৃষ্টির পর কীভাবে জল ও অন্যান্য কার্বন অণু তৈরি হয়েছিল। সেখানে মহাজাগতিক কণাদের ভূমিকা কতখানি, তা বুঝতে বিজ্ঞানীদের সাহায্য করতে পারে এই গবেষণা ।