Offbeat: ভালোবাসা বন্দি তালায়

রোমান্টিক মানুষদের কাছে প্যারিস ছাড়া অন্য শহর বোধহয় এই পৃথিবীতে নেই। প্যারিসে ভালোবাসা সম্পর্কিত এমন কিছু ব্যাপার আছে যা এই শহরকে অন্য সব শহর থেকে…

রোমান্টিক মানুষদের কাছে প্যারিস ছাড়া অন্য শহর বোধহয় এই পৃথিবীতে নেই। প্যারিসে ভালোবাসা সম্পর্কিত এমন কিছু ব্যাপার আছে যা এই শহরকে অন্য সব শহর থেকে আলাদা করেছে। এই শহরটি ভালোবাসাকে এমনভাবে লালন করছে যেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ভালোবাসার ধ্বংস হবে না। এখানেই প্যারিসের আইফেল টাওয়ার, ল্যুভর জাদুঘর এবং সর্বদেবতাদের মন্দির বিশ্বের সব অরাজকতা, যুদ্ধ ও নাৎসিদের বিরোধীতা। তেমনই এক জায়গা হলো প্যারিসের পন্ট ডেস আর্টস ব্রিজ। যা ভালোবাসা এবং রোমান্সের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এখানে প্রেমিক-প্রেমিকারা তাদের ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে তালা ঝুলিয়ে যায়।

এখানে সুন্দর একটি তালায় নিজেদের নাম লিখে প্রেমিক-প্রেমিকা একসঙ্গে সেতুর পাশে দাড়িয়ে তালাটি ঝুলিয়ে দেয়। তারপরে চাবিটি সেতুর নিচে প্রবাহিত নদীতে ফেলে দেয়। চাবিটি নদীতে ফেলে দেওয়ার ফলে এটি খুঁজে পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। এজন্য প্রেমিকরা মনে করে তাদের প্রেম অমরত্ব লাভ করেছে।

এই কথাগুলো শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই। তাহলে আপনাকে একবার ইউরোপ ভ্রমণ করা উচিত। অনেকেই মনে করতে পারেন যে এই লাভ-লক রীতিটির উৎপত্তি প্যারিস থেকেই শুরু। মজার ব্যাপার হলো রীতিটি সার্বিয়ার ভ্রঞ্জাক্কা বানজা নামে একটি শহরে শুরু হয়েছিল। সেখানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে এক যুবক ও যুবতী প্রেমে পড়েছিলেন। তারা ওই শহরের লুজুবাভি ব্রিজের ওপর প্রায় প্রতি রাতেই মিলিত হতো। কিন্তু যুবকটি সামরিক বাহিনীতে যোগদানের পর অন্য কারো প্রেমে পড়ে যায়। এই ঘটনা যুবতী সহ্য করতে না পেরে হৃদরোগে মারা যায়। এরপর থেকেই ওই স্থানে এক গুজব ছড়িয়ে পরে যে, যুবকটির আত্মা ব্রিজটির কাছে কান্না করছে, তালায় তাদের ভালবাসার নাম লিখছেন। ব্রিজের সঙ্গে তালা ঝুলিয়েছেন যেন তাদের ভালোবাসা পূর্ণতার রূপ পায়।

এছাড়াও মনে করা হয় প্রেমের লক ব্রিজের বর্তমান তরঙ্গের উৎস ফেডেরিকো মক্সিয়া নামে একক ইতালিয়ান লেখকের কাছ থেকে এসেছে। মোকিয়া ‘আই ওয়ান্ট ইউ’ বইটিতে রোমের ২১০০ বছর বয়সি পন্টে মিলভিও ব্রিজে একটি প্রদীপ পোস্টে একটি প্রেমের তালা ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।