Ganesh Chaturthi: বাঙালির রহস্যময় গণেশ ‘গোল্ডের ফিগার থ্রি ইঞ্চেস টল,ক্রাউনে ডায়মন্ড…’

Ganesh Chaturthi: গণেশ পুজো মূলত অবাঙালিদের মধ্যে প্রচলিত। আর বাঙালির কাছে বিশেষ রহস্যময়। যে তিন ইঞ্চির গণেশ কব্জা করতে গিয়েও পারেনি মগনলাল মেঘরাজ।  লিখলেন ডল চক্রবর্তী।

mysterious-bengali-ganesha-gold

Ganesh Chaturthi: অন্ধকার ঘরে মগনলাল মেঘরাজ বলেছিল গণেশ চাই। ঠাণ্ডা গলায় হুমকি দিয়েছিল, দরকার হলে ছিনিয়ে নিই। তাতে আমার পয়সাও লাগে না। কাশীর বর্ধিষ্ণু বাঙালি বনেদি ঘোষাল পরিবারের একটি সোনা-পান্না-হীরা-চুনিতে মোড়া ছোট্ট গণেশ মূর্তি চাই মগনলালের। তার বড় শখ সে ওই গণেশটি নেবে। গণেশের বিবরণ এমন “গোল্ডের ফিগার , থ্রি ইঞ্চেস টল, ক্রাউনে ডায়মন্ড , বেসে পান্না ও চুনি,নেপালের জিনিস।

Advertisements

অদ্ভুত এই গণেশ মুর্তিকে লুকিয়ে রেখেছিল বাড়ির কণিষ্ঠতম সদস্য রুকু আর গৃহকর্তা, তার দাদু। অন্যদিকে গঙ্গার ঘাটে আবির্ভাব এক রহস্যময় মছলিবাবার। অজানা আততায়ী হত্যা করে মুর্তি গড়ার কারীগর শশীবাবুকে, যিনি কাকতালীয়ভাবে উদ্ধার করেন গণেশ মূর্তিটি সিংহের মুখের ভেতর থেকে। দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জনের দিন ফেলুদা স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় জাল গুটিয়ে আনেন। এই গণেশ বাঙালির ঘরে ঘরে ঢুকে আছে সত্যজিৎ রায়ের লেখা ও চলচ্চিত্র ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’-এর কারণে।

   

সত্যজিৎ রায় যে গণেশ তাঁর জয় বাবা ফেলুনাথ বইতে লিখেছেন সেটি নেপালের। তাঁর এই রহস্য কাহিনীতে পূরাতাত্বিক সামগ্রী চোরাচালানের বিষয়টি উঠে এসেছে। ফেলুদা সেই রহস্য সমাধান করে। মগনলাল মেঘরাজ ধরা পড়ে।

পৌরাণিক সূত্র অনুযায়ী গণেশ হলেন মহাদেবের পুত্র। তিনি গণপতি, বিঘ্নেশ্বর, বিনায়ক, গজপতি, একদন্ত ইত্যাদি নামেও পরিচিত। নেপাল, শ্রীলঙ্কা , থাইল্যান্ড , ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর , মালয়েশিয়া , ফিলিপাইন,জাপানে দেখা যায় সেখানকার স্থানীয় রীতির গনেশ। এছাড়া বাংলাদেশ , ফিজি, গায়ানা , মরিশাস এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে গণেশের অস্তিত্ব মূলত ভারতীয় হিন্দু বংশোদ্ভূতদের মধ্যে। জৈন ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যেও গণেশ-ভক্তিবাদ মিশে গিয়ে গণেশ পূজার প্রথা বিস্তার লাভ করেছে।

Advertisements

যদিও গণেশের অনেক গুণাবলী রয়েছে, তবে তিনি সহজেই তার হাতির মাথা দ্বারা চিহ্নিত হন। গণেশকে বিঘ্ননাশকারী, বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা রূপে পুজো করা হয়। বিভিন্ন শুভকার্য, উৎসব ও অনুষ্ঠানের শুরুতেও তার পূজা প্রচলিত আছে। অক্ষর ও জ্ঞানের দেবতা রূপে লেখার শুরুতেও গণেশকে আবাহন করা হয়।

আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন। তারপরেই গণেশ চতুর্থী। দিকে দিকে শুরু হয়েছে পুজোর তোড়জোড়। বাঙালি, অবাঙালি হোক বা বিদেশি গণপতি বাপ্পার আরাধনায় সবাই ব্যতিব্যস্ত। গণেশ পুজোর মধ্যে দিয়ে বাড়িতে শুভ শক্তির আহ্বানে বহু মানুষ। সঙ্গে তার পছন্দের মোদক ও লাড্ডু সাজিয়ে হবে পুজোর আয়োজন। তবে এই গণেশ পুজো মূলত অবাঙালিদের মধ্যে জনপ্রিয়। আর বাঙালির কাছে সেটি রহস্যময়। যাকে কব্জা করতে গিয়েও পারেনি মগনলাল মেঘরাজ।