এত নৃশংস জোনাকি? অবাঞ্ছিত পুরুষদের খুন করে নেয় প্রতিশোধ

মানুষের নিয়মে অপরাধী ক্ষমার যোগ্য। কিন্তু জোনাকি (Firefly) সমাজে অপরাধ মানেই ভয়ঙ্কর শাস্তি-চিপে চিপে হত্যা। অলক্ষ্যে ক্রূর হিংস্র একজন নিজেকে লুকিয়ে রাখতে মরিয়া। এ এক…

firefly2 এত নৃশংস জোনাকি? অবাঞ্ছিত পুরুষদের খুন করে নেয় প্রতিশোধ

মানুষের নিয়মে অপরাধী ক্ষমার যোগ্য। কিন্তু জোনাকি (Firefly) সমাজে অপরাধ মানেই ভয়ঙ্কর শাস্তি-চিপে চিপে হত্যা।

অলক্ষ্যে ক্রূর হিংস্র একজন নিজেকে লুকিয়ে রাখতে মরিয়া। এ এক নিরন্তর খেলা। কখনও অপরাধী ধরা পড়ছে, কখনও তদন্তকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে। সময় হলেই তার ভিতর জেগে উঠছে নৃশংসতা। ভয়, প্রতিশোধ বা মানসিক কারণে অপরাধ সংগঠিত করে চলার এই নিরন্তর প্রক্রিয়ার একটি পর্যায় হলো ফাঁদ পেতে গণপিটুনিতে খুন। অপরাধ বিজ্ঞানের এই দিকগুলি ধরে দিনের পর দিন চলছে গবেষণা। দেখা যাচ্ছে ‘সিরিয়াল কিলার’ (খুনের নেশায় খুন) মানুষের তুলনায় আরও নৃশংস জোনাকি!

   

firefly

জোনাকিরা দেয় আলো…এই আলোতেই মিশে আছে নৃশংসতা। মিটমিটে নরম আলোর পিছনে রহস্য কি? পতঙ্গ বিজ্ঞানীরা দিনরাত এক করে গবেষণা করে চলেছেন। লক্ষ্য বিশ্বের বিস্ময় জোনাকি থেকে নতুন কোনও আলোর সন্ধান পাওয়া। যে আলো নরম। অত্যন্ত দরকারি এই আলো। সেটা খুঁজতে গিয়েই গবেষকরা পাচ্ছেন নিরীহ সুন্দর জোনাকির নৃশংস এক চরিত্র। সে ফাঁদ পেতে বন্ধুকেই মেরে ফেলে।

ভয়াবহ সেই খুনের মুহূর্ত। ইশারায় ছুটে আসে বাকিরা। তারপর শুরু হয় চিপে ধরা। যতক্ষণ না আগন্তুক বন্ধু মরে যাচ্ছে, ততক্ষণ তীক্ষ্ণ নজরে সেই মৃত্যু উপভোগ করে লাস্যময়ী জোনাকি। পুরুষ বন্ধুকে খুনের শেষ মুহূর্তে চোখ ধক ধক করে জ্বলে ওঠে সেই লাস্যময়ীর। শত্রুকে মেরে ফেলার পর আবার সে শান্ত-স্নিগ্ধ। মায়াবী আলোর রূপসী।

অবাঞ্ছিত পুরুষকে শত্রু বলেই মনে করে স্ত্রী জোনাকি।গবেষকরা বলছেন, এক প্রজাতির স্ত্রী জোনাকি পোকা কখনই অন্য প্রজাতির পুরুষ জোনাকির সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারে না। এই কড়া নিয়ম মানতেই হবে। নিয়ম না মানা জোনাকি সমাজে অন্যায়। এর পরেও যদি কোনও হতভাগা প্রেমিক জোনাকি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে অন্য গোষ্ঠির স্ত্রী জোনাকির দিকে উড়ে গেলেই  নিশ্চিত মৃত্যু।

firefly

এ এক নরম আলোয় হত্যার ছক। আর হত্যাকারী জোনাকি…

জোনাকির মধ্যে লুসিফেরিন নামে রাসায়নিক পদার্থ থাকে। বাতাসে থাকা অক্সিজেন ও লুসিফেরিন পরস্পর সংযুক্ত হলেই আলো উৎপন্ন হয়। মানুষের তৈরি আলো তাপ উৎপন্ন করে। কিন্তু জোনাকির আলো থেকে খুব সামান্য পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হয়। তাই জোনাকির আলোকে বলা হয় ঠাণ্ডা আলো। এর নরম আলোক বিচ্ছুরণে মিশে আছে খুনের চক্রান্ত।

বিজ্ঞানীরা এই ঠাণ্ডা আলো থেকে ঠান্ডা বাল্ব বা আলো তৈরির চেষ্টা করছেন। তাঁরা সফল হলে সফল সেটি হবে বিস্ময়কর বিজ্ঞান আবিষ্কার।

অপরাধ বিজ্ঞানের সর্বশেষ কথা ‘অপরাধের ক্ষমা নেই’। কেউ বলেন পাপের বেতন শাস্তি! আর বিশ্বজুড়ে পরিচিত ‘Crime doesn’t pay’ বাক্যটি। অপরাধীকে ক্ষমা করা যায়, কিন্তু অপরাধকে নয় -এই মূল মন্ত্র ধরে জটিল থেকে জটিলতর অপরাধ তদন্ত চলে আসছে। তবে এসবই মানুষের জন্য প্রযোজ্য। জোনাকির জন্য আছে অপরাধের ভিন্ন আইন। এখানে অপরাধীর ক্ষমা নেই। শাস্তি-আলোর ফাঁদে ফেলে হত্যা। জোনাকি নৃশংস হত্যাকারী।