স্টেডিয়ামের কানায় কানায় দর্শক। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলা মোহনবাগান মাঠে। গ্যালারি থেকে নিরন্তর ভেসে আসছে সবুজ মেরুন জার্সি পরা ফুটবলারদের জন্য স্লোগান। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে গোল করলেন প্রতিপক্ষের ফুটবলার। যাদের ময়দানে খেলা দেখার অভিজ্ঞতা রয়েছেন তারা জানেন যে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল কিংবা মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের নিজের মাঠে খেলা হলে পরিবেশ থাকে অন্যরকম। ঘরের ছেলেরা তো চাপে থাকেই, প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের লড়াই করতে হয় শব্দবানের বিরুদ্ধে।
এবারের কলকাতা ফুটবল লীগের। তৃতীয় ম্যাচে ডালহৌসি অ্যাথলেটিক ক্লাবের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্লাবের মাঠে নেমেছিল মোহনবাগান৷ মোহনবাগান জিতলেও ডালহৌসির হয়ে একটি গোল করেছিলেন আভাস কুন্ডু। বাগানের বিরুদ্ধে দল জিতলে আভাস নিশ্চই আরও খুশি হতেন। কিন্তু মোহনবাগানের বিরুদ্ধে মোহনবাগানেরই মাঠে গোল করা মানসিক কাঠিন্য সবার মধ্যে থাকে না। স্কিলের সঙ্গে আভাসের মানসিক দৃঢ়তা না থাকলে এই গোল তিনি মিস করতে পারতেন। এই গোলের কৃতিত্ব অবশ্য মাঝমাঠের ফুটবলারকে দিলেন আভাস কুন্ডু। বললেন, “মাঝমাঠ থেকে ভালো বল না বাড়ালে গোল করা সম্ভব ছিল না।”
মাঠের বাইরে অবশ্য একাধিকবার কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন চুঁচুড়ার আভাস। জাতীয় শিবিরে ডাক পাওয়ার পরেও খেলা হয়নি দেশের জার্সিতে। সেই আক্ষেপ ভুলে শুরু করেছিলেন নতুন করে পথ চলা। শেষ পর্যন্ত উত্তরপাড়া নেতাজী ব্রিগেডের সৌজন্যে খেলছেন কলকাতা ফুটবল লীগে, ডালহৌসি ক্লাবের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে।
চার বছর বয়সে ফুটবলে প্রথম পাঠ। বাবা মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন স্থানীয় মাঠে। পাড়ার মাঠ থেকে শুরু করেছিলেন ফুটবল খেলা। পেয়ারাবাগানের মাঠের কথা আলাদাভাবে বলেছিলেন আভাস। নিজের ফুটবল প্রতিভার জোরে অনূর্ধ্ব ১৭ জাতীয় শিবিরে প্রবেশ মুখে ছিলেন তিনি। বাধ সাধক সাসপেনশন। এরপর এই সুযোগ আর পাননি। কিছুটা কমেছিল মনোবল। বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল উত্তরপাড়া নেতাজী ব্রিগেড। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে মোহনবাগানেরই মাঠে গোল করলেন আভাস কুন্ডু।