শনি ন্যায়ের দেবতা। জ্যোতিষ মতে, তিনি কর্মফলদাতা ও দণ্ডাধিকারী। কোনও ব্যক্তির ওপর শনির প্রসন্ন থাকলে সেই ব্যক্তি রাজা হতে পারেন। কিন্তু শনিদেব একবার কারও ওপর অসন্তুষ্ট হলে জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, ভুল বা অনৈতিক কাজ করলে সেই জাতকরা শনির রোষে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে শনিদেবকে প্রসন্ন করতে হয়। শনিকে কালো রঙের বিভিন্ন জিনিস অর্পণ করার রেওয়াজ। কলো তিল, কালো বিউলি ডাল, কালো পোশাক নিবেদন করলে নাকি শনি তুষ্ট হন। শনির মূর্তির রঙও কালো ও নীল। কেন কালো রং শনিদেবের এত পছন্দের?
পুরাণ মতে, বিশ্বকর্মার কন্যা সংজ্ঞার সঙ্গে সূর্যের বিবাহ হয়েছিল। তাঁদের দুই সন্তান যম ও যমুনা। কিন্তু সংজ্ঞা সূর্যের তেজ সহ্য করতে পারতেন না। তখন সংজ্ঞা নিজের ছায়ায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে সেটিকে সূর্যলোকে রেখে তপস্যার জন্য বেড়িয়ে পড়েন। এসব সূর্য কিছু জানতেন না। ছায়াকে, সংজ্ঞা মনে করে তাঁর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্কে জড়ান সূর্য। সে সময় শিবের কঠোর তপস্যা করেন ছায়া।
দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণীর বোনেদের বাড়ি কোথায় জানেন কী?
বুধবারই কেন হয় সর্বশোকহন্তা গণেশের পুজো? কীভাবে করবেন গণপতিকে তুষ্ট?
ওই কঠীন তপস্যার কারণে ছায়া নিজের সঠিক যত্ন নিতে পারেননি। যার ফলে গর্ভস্থ শিশু শ্যামবর্ণ হয়। অপুষ্টির শিকার হয় সেই বালক। ওই শিশুর নামই শনি। শনির শ্যামবর্ণ রূপ দেখে পিতা সূর্য তাঁকে নিজের পুত্ররূপে স্বীকার করতে চাননি। পিতার অবহেলায় কষ্ট পান শনি। তবে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সময়ে শিবের শক্তি লাভ করেন শনি। পরবর্তী কালে শিবের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন সূর্য। কালো রঙের কারণে বঞ্চিত হওয়ায় এই রংকেই আপন করে নেন শনি। তাই কালো রং শনির অত্যন্ত প্রিয়।
অন্য একটি মতে, একদা শনির প্রিয় গৃহ কুম্ভ পুড়িয়ে দেন সূর্য। তবে পরবর্তী কালে নিজের ভুল মেনে শনির সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। সূর্য, শনির গৃহে পৌঁছলে সেখানে কালো তিল দিয়ে পিতাকে স্বাগত জানান কর্মফলদাতা। এতে প্রসন্ন হয় সূর্যদেব। তার পর তিনি শনিকে আশীর্বাদ দেন। এ কারণে কালো তিল শনির প্রিয়। কালো তিল নিবেদন করলে শনিদেব খুশি হন।