হেমন্তের সোনালি ডানায় ভর করে আসে শীত। শীতের কথা স্মরণ করলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে আসে কুয়াশার চাদরে ঢাকা চারপাশ। তবে শীতকালে সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়া থাকে। এই সময়ে চুলের যত্ন নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে! ঠান্ডা বাতাস এবং তাপমাত্রার হ্রাস আপনার মাথার ত্বককে শুষ্ক করে তুলতে পারে। চুলগুলিকে খুব হিমশীতল, রুক্ষ এবং ভেঙে যাওয়ার জন্য সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। তবে ঋতু যেমনই হোক, আমরা যেন সবসময় প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল থাকি। এইসময় ত্বকের সাথে সাথে চুলেরও চাই বিশেষ যত্ন। নাহলেই বাড়তে পারে চুল পড়া। স্ক্যাল্প ও চুল তার প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারিয়ে রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সব সময়ই বিউটি রুটিন সহজ রাখার পরামর্শ দেন। অতিরিক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারে শুধুই যে চুলের ক্ষতি হয় তা নয়, বরং একটি সঠিক হেয়ার কেয়ার রুটিন মেনে চলাও হয় না। তাই ঠিকভাবে একটি হেয়ার কেয়ার রুটিন মেনে চলুন এই শীতে। ফল পাবেন হাতেনাতে। জেনে নিন শীতে চুলের যত্ন নেওয়ার কিছু সহজ টিপস –
তেল মালিশঃ অতিরিক্ত তেল মাখা যেমন চুলের জন্য ক্ষতিকর তেমনি তেল না মাখলেও চুল হয়ে যায় শুষ্ক। পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল মেখে সারা রাত কিংবা এক ঘণ্টা রেখে দিন। কিছুটা নারকেল তেল নিয়ে গরম করে মাখতে পারেন। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। শীতকালে অবশ্যই এটি উপকার দেবে।
শ্যাম্পু করার নিয়মঃ অনেকেই প্রতিদিন চুল ভেজাতে চান না। কিন্তু তাই বলে দিনের পর দিন শ্যাম্পু না করে থাকলে স্ক্যাল্প অপরিষ্কার থেকে যায়। ফলে চুল পড়ার সমস্যা অনেকটাই বাড়তে পারে। তাই আপনাকে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চুলের যত্ন নিতে হবে। সপ্তাহের প্রতিদিন শ্যাম্পু করার খুব প্রয়োজন নেই। সপ্তাহে ২-৩ দিন শ্যাম্পু করে স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখুন। পরিমাণ মতো শ্যাম্পু নিয়ে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। প্রথমে স্ক্যাল্প ভালো করে ঘষে নিন। তারপর চুলেও লাগিয়ে নিন সেই শ্যাম্পু। ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পুর পর অবশ্যই কন্ডিশনার ও সিরাম লাগাবেন।
জলের তাপমাত্রা কমিয়ে দিনঃ গরম জল আপনার চুলের আর্দ্রতা নষ্ট করতে পারে ৷ চুলের গোড়া ভেঙে যেতে পারে ৷ এমনকি যদি তাপমাত্রা শূন্যের নীচে নেমে যায় তখন উষ্ণ ঝরনা আপনার যা প্রয়োজন হতে পারে । আপনার চুল একটি মৃদু ধোয়া দেওয়ার পরে, এটি একটি ঠান্ডা ধুয়ে দিন ।
শ্যাম্পু করার পর যা করবেনঃ হেয়ার টুল আপনার চুলের ক্ষতি করে। অনেকেই শ্যাম্পু করার পর চুল সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে নেন। নাহলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত ব্লো ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো। হেয়ার স্ট্রেটনার, কার্লার অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করবেন না। শীতে এমনিই চুল রুক্ষ থাকে,অতিরিক্ত হেয়ার টুল ব্যবহারে চুলের ক্ষতি হতে পারে। ডগা চেরা চুল নিয়ে ভুক্তোভোগী হতে পারেন আপনি। চুল পড়াও বাড়তে পারে। স্ট্রেটনিং করার আগে হিট প্রোটেকশন সিরাম লাগান। অতিরিক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো। সবচেয়ে ভালো শ্যাম্পু করার পর রোদে চুল শুকিয়ে নেওয়া।
হেয়ার মাস্ক ব্যাবহারঃ চুলের বিশেষ যত্নের জন্য সপ্তাহের একদিন ঘরোয়া হেয়ার মাস্ক ব্যাবহার করুন। কলা এবং অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পারেন। দুধ ও মধু চুলকে মজবুত করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এটি ব্যাবহার করলে উপকার পেতে বাধ্য। টক দই, ডিম দিয়েও বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারেন হেয়ার প্যাক। এই হেয়ার প্যাক স্ক্যাল্পে ও চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ১ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। উপকার পাবেন।