কাজের চাপ, ব্যস্ততা ও নিত্যদিনের দায়িত্বের মধ্যে মাঝে মাঝে প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে ইচ্ছে করে(Travel Destination)। প্রতিদিনের স্ট্রেস নিতে নিতে জীবনটা যেন তিক্ত হয়ে ওঠে। কিছুটা বিশ্রাম, শান্তির মুহূর্ত আমাদের প্রত্যেকের প্রয়োজন।
এই সব ব্যস্ততার মাঝে একটু স্বস্তির জন্য দুদিনের ছোট্ট ভ্রমণ মানসিকভাবে আমাদের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে। সমস্যা তখন হয়, যখন মন চায় ছুটিতে গিয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে কিন্তু অফিসে দীর্ঘ সময়ের ছুটি মেলে না। তবে চিন্তার কিছু নেই। কাছাকাছি এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে এক বা দুদিনের জন্য যেতে পারবেন। নিরিবিলি শান্ত পরিবেশে সমুদ্রের শীতল হাওয়ায় নিজেকে রিফ্রেশ ফিল করাতে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন এইসব জায়গা থেকে।
আমরা যদি খুব দূরে না গিয়ে হাতের কাছেই কিছু জায়গা খুঁজে পেতে পারি, তবে আমাদের বেড়ানোটা আরও সহজ হয়ে যাবে। বেশিরভাগ সময় আমাদের যেসব চেনা জায়গায় ছুটি কাটানোর মন চায়, সেখানে ভিড় অত্যন্ত বেশি থাকে। যেমন দিঘা বা মন্দারমণির সমুদ্র সৈকত, যেখানে দিনের পর দিন প্রচুর ভিড় থাকে। তবে যদি একটু চিন্তা করি, তবে কাছাকাছি এমন কিছু নিরিবিলি স্থান রয়েছে, যেখানে শান্তির সন্ধানে যেতে পারেন। এইবার, আমি এমন কিছু স্থান সম্পর্কে জানাবো যেখানে আপনি যেতে পারেন, আর সেখানে পাবেন একদম নিঃশব্দ সমুদ্র সৈকত এবং প্রকৃতির অদ্ভুত সান্নিধ্য।
লালগঞ্জ সৈকত
কলকাতা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লালগঞ্জ সৈকত। এটি একটি অচেনা সৈকত, যা সাধারণত পর্যটকদের কাছে পরিচিত নয়। নামখানার কাছে এই সৈকতটি অনেকটা গোপন রত্নের মতো। এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেকটা অটুট রয়েছে। সৈকতের বালির ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে বেরিয়ে পড়ে লাল কাঁকড়া, যা এই স্থানের বিশেষত্ব। সমুদ্রের হাওয়া এবং অদ্ভুত নিরিবিলি পরিবেশ আপনাকে একদম শান্তি দিতে সক্ষম। যদি আপনি প্রকৃতির মাঝে কিছুটা একা থাকতে চান, তবে এই সৈকতটি একেবারে আদর্শ। এখানে পৌঁছানোর জন্য শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকাল ট্রেনে চেপে নামখানা স্টেশনে নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে টোটো বা অটোতে সোজা চলে যাবেন লালগঞ্জ সৈকতে। এই জায়গায় যেতে যেতে আপনি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের মধ্য দিয়ে চলতে পারবেন, যা একেবারে আরেক ধরনের অভিজ্ঞতা হবে। এই সৈকতের কাছেই রয়েছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য, যা আপনি কোনোদিন দেখেননি এমন একটি ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দিতে পারে।
বাগদা বিচ
বাগদা বিচ ভারতের ওড়িশা রাজ্যে অবস্থিত। এখানে সমুদ্রের ঢেউ অনেক শান্ত, একদম নিরব এবং প্রশান্তিপূর্ণ। এখানে বসে থাকতে থাকতেই সময় কেটে যায়। এই বিচটি অন্য সব সমুদ্র সৈকতের থেকে একেবারে আলাদা। এখানে রয়েছে অদ্ভুত নিস্তব্ধতা, যা খুব কম জায়গায় পাওয়া যায়। যদি আপনি আরামদায়ক, নিরিবিলি কিছু সময় কাটাতে চান, তবে বাগদা বিচ খুবই ভালো জায়গা। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং শান্ত পরিবেশ আপনাকে জীবনের এক নতুন অভিজ্ঞতা উপহার দেবে। কলকাতা থেকে প্রায় ২৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাগদা বিচ। প্রথমে বালেশ্বর স্টেশনে ট্রেনে পৌঁছাতে হবে, তারপর সেখানে থেকে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে হবে বাগদা বিচে। এই বিচের একেবারে তীরবর্তী স্থানে গেলে আপনি অনুভব করবেন, যেন আপনি কোনও বিশাল সমুদ্রের মাঝে হারিয়ে গেছেন।
তাজপুর
সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যকে আলাদা করতে পারেন ক্যাসুয়ারিনা গাছের ঝরঝরে সারি যা আপনি এর তীরে পাবেন। শহরের তাড়াহুড়ো থেকে বাঁচার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ জায়গা এটি। এটি নরম সাদা বালির আরাম এবং ঢেউ দেখার জন্য উপযুক্ত স্থান। সমুদ্র উপকূলের ধারে সুস্বাদু সামুদ্রিক মাছ পমফ্রেট ফ্রাই এবং গলদা চিংড়ির মতো খাবারগুলি চেখে দেখতে মিস করবেন না। তাজপুর জেলায় কোনো ডেডিকেটেড রেলওয়ে স্টেশন নেই। নিকটতম দুটি প্রধান রেল স্টেশন হল কাঁথি এবং দীঘা । আপনি কাঁথি পিএইচ থেকে তাজপুরে একটি অটোরিকশা নিতে পারেন। এছাড়াও আপনি গাড়ি ভাড়া করে আসতে পারেন এখানে।