ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, জানিয়েছেন এক বিশেষজ্ঞ। সম্প্রতি “ফিগারিং আউট উইথ রাজ শামানি” পডকাস্টের একটি পর্বে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. তরঙ্গ কৃষ্ণা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, ব্রোকলি, ব্লুবেরি, টমেটো, ফুলকপি এবং আপেল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অনুসরণ করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
ক্যান্সার প্রতিরোধে ৩টি সেরা খাবার:
পডকাস্টে ডা. কৃষ্ণা যখন ক্যান্সার প্রতিরোধে সেরা ৩টি খাবারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন, “প্রথমে ব্রোকলি। ব্রোকলি খুবই ভালো, তবে এটি ভাজা উচিত নয়, বরং অলিভ অয়েলে হালকা সেঁকা উচিত। এটিকে তাজা রেখে একটু লবণ এবং একটু গোলমরিচ দিয়ে খেতে পারেন। দ্বিতীয়টি ব্লুবেরি, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং তৃতীয়টি হলো টমেটো, এতে উচ্চ পরিমাণে লাইকোপিন থাকে, যা খুবই উপকারী। তবে টমেটো হালকা গ্রিল করে খাওয়া উচিত, কারণ গ্রিল করলে লাইকোপিন ভালোভাবে শোষিত হয়। টমেটো কাঁচা খাওয়া উচিত নয়।”
ডা. কৃষ্ণা আরও বলেন, “এই তিনটি খাবার খেলে আমি নিশ্চিত যে আপনি নিজের শরীরের প্রতিটি কোষের যত্ন নিচ্ছেন এবং সুরক্ষিত আছেন।”
ব্রোকলি এবং ব্লুবেরি অনেক সময় দামি এবং সহজলভ্য নয়, তাই ডা. কৃষ্ণা বিকল্প খাবারের কথা বলেন। তিনি বলেন, “ব্রোকলির বিকল্প হিসেবে ফুলকপি খুবই ভালো, তবে এটি অবশ্যই কীটনাশকমুক্ত হতে হবে। কেউ যদি গ্লুটেন মুক্ত ডায়েট অনুসরণ করেন, তবে ফুলকপি তার জন্য আদর্শ খাবার। ব্লুবেরির বিকল্প হিসেবে আপেল খাওয়া যেতে পারে। এক আপেল প্রতিদিন ডাক্তারকে দূরে রাখে। তবে আপেলটি অবশ্যই মোমযুক্ত না হওয়া উচিত এবং এটি অর্গানিক হওয়া উচিত। একটি ভালো আপেল সঠিকভাবে দেখতে পছন্দ করা হয় না, এর আকৃতি অস্বাভাবিক হতে পারে, আবার রঙও সাধারণত উজ্জ্বল লাল না হয়ে একটু ধূসর হতে পারে।”
ডা. কৃষ্ণা আরও বলেন, “আপনি যদি শিমলা বা কাশ্মীরে যান, সেখানে যে আপেল পাওয়া যায়, তা দেখতে কিছুটা অস্বাভাবিক হতে পারে, তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। ওয়াশিংটন আপেল কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।”
ডা. কৃষ্ণা বলেন, “বিকল্প খাদ্য উপাদান হিসেবে ফুলকপি এবং আপেল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এসব খাবারের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে, যা শরীরের কোষগুলিকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে। একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারবেন।”
তিনি আরও জানান, খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক অপ্রতিষ্ঠিত জীবনযাপন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এজন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ অনুসরণ করা জরুরি।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে আরও কিছু খাদ্য উপাদান রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। যেমন বিভিন্ন ধরণের সবজি, ফল, বাদাম, মসলাযুক্ত খাবার ইত্যাদি। এই খাবারগুলো শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সরবরাহ করে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
ডা. তরঙ্গ কৃষ্ণার মতে, ব্রোকলি, ব্লুবেরি, টমেটো, ফুলকপি এবং আপেল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি একটি সুস্থ জীবনযাপন এবং শারীরিক পরিশ্রমও গুরুত্বপূর্ণ। যেসব খাবার সহজলভ্য নয়, তাদের বিকল্প হিসেবেও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া যেতে পারে। তবে, নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আপনার শারীরিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।