Preserve Food: এই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করুন আর নষ্ট হবে না খাবার

কলকাতা, ১৩ সেপ্টেম্বর: গরম এবং আর্দ্রতায় ভরা ভারতীয় আবহাওয়ায় খাবার দ্রুত ফাঙ্গাসের (Preserve Food) শিকার হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের পুরোনো মা ঠাকুমার রান্নাঘরের রহস্যগুলো এখনও…

Preserve Food

কলকাতা, ১৩ সেপ্টেম্বর: গরম এবং আর্দ্রতায় ভরা ভারতীয় আবহাওয়ায় খাবার দ্রুত ফাঙ্গাসের (Preserve Food) শিকার হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের পুরোনো মা ঠাকুমার রান্নাঘরের রহস্যগুলো এখনও অক্ষত। “আর ফাঙ্গাসে খাবার নষ্ট হবে না” এই স্লোগান নিয়ে আজকালকার গৃহিণীরা ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় সংরক্ষণ কৌশলগুলোকে নতুন করে গ্রহণ করছেন।

এই কৌশলগুলো শুধু খাবারের সতেজতা বজায় রাখে না, বরং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি রোধ করে। তার সাথে পরিবেশবান্ধব উপায়ে সংরক্ষণ নিশ্চিত করে। ইউএনএফএও-র একটি রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে প্রতি বছর ৩০-৪০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন নষ্ট হয়, অপর্যাপ্ত সংরক্ষণের কারণে। এই সমস্যা সমাধান করতে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ পরিবার খাবারের বর্জ্য কমাচ্ছে।

   

ভারতীয় রান্নাঘরের প্রথম রহস্য হল শুকানোর কৌশল। আমাদের পূর্বপুরুষরা ফল, সবজি এবং মাছ-মাংস শুকিয়ে সংরক্ষণ করতেন, যা ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করে। উদাহরণস্বরূপ, আমের পাচড়ি বা সূর্যশুকোই ফলগুলোকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

আজকালকার গৃহিণীরা সবজিগুলোকে কাপড়ে মুড়ে হাওয়ায় শুকোন এবং তারপর সিল করা জারে রাখেন। এই পদ্ধতি জলের পরিমাণ কমিয়ে ব্যাকটেরিয়া এবং যীস্টের বৃদ্ধি বন্ধ করে। পাঞ্জাবের ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে গম বা চালের শস্যকে কাঠের ছাই বা গোবরের ছাইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে মাটির কলসিতে ভর্তি করা হয়।

শস্যের ৩/৪ অংশ ভর্তি করে বাকি ১/৪ অংশ ছাই দিয়ে পূর্ণ করুন এতে কীটপতঙ্গ এবং ফাঙ্গাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। ছয় মাস পর শস্য এবং কলসি সূর্যে শুকিয়ে নতুন ছাই দিয়ে পুনরায় ভর্তি করুন। এই পদ্ধতি শুধু ফাঙ্গাস রোধ করে না, বরং শস্যকে বছরের পর বছর সতেজ রাখে।মশলা সংরক্ষণে ভারতীয় রান্নাঘরের মাসলার কৌটো একটি অমূল্য সম্পদ।

ধাতুর বাক্সে সাতটি ছোট কম্পার্টমেন্টে হলুদ, জিরা, ধনে এবং লংকার মতো মশলা আলাদা করে রাখুন। ঘন লিড দিয়ে ঢেকে রাখলে আর্দ্রতা প্রবেশ করে না এবং মশলার স্বাদ অটুট থাকে। সাবানের পাথরের মশলা বাক্স ব্যবহার করলে মশলার প্রাকৃতিক তেল সংরক্ষিত হয় এবং ফাঙ্গাসের ভয় থাকে না।

বর্ষায় মশলা পাউডারগুলোকে নিম পাতা বা শুকনো লংকার টুকরোর সঙ্গে মিশিয়ে রাখুন এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ফাঙ্গাস এবং কীটপতঙ্গ দূরে সরিয়ে দেয়। মশলা কেনার পর প্রথমে ফ্রিজারে দু’দিন রাখুন, যাতে কোনো ডিম বা ছত্রাকের বীজ ধ্বংস হয়। এরপর এয়ারটাইট কনটেইনারে স্থানান্তর করুন। এই কৌশল দিয়ে আপনার মশলা মাসের পর মাস সতেজ থাকবে।

Advertisements

আচার এবং চাটনির ক্ষেত্রে ভারতীয় ঐতিহ্য লবণ এবং তেলের ব্যবহার আশ্চর্য জনক ভাবে কাজ করে। আমের আচার তৈরিতে সরষের তেলের একটি স্তর উপরে রাখুন এটি আর্দ্রতা এবং ফাঙ্গাস থেকে রক্ষা করে। সপ্তাহে একবার আচারের জারটি সূর্যে রাখুন, যাতে প্রাকৃতিক উত্তাপ ফাঙ্গাস ধ্বংস করে।

তেতুলের ক্ষেত্রে সূর্যের তাপে শুকিয়ে গ্লাসের জারে রাখুন এবং লবণ মিশিয়ে সংরক্ষণ করুন। ফ্রিজে রাখলে তেতুলের পেস্ট ছোট গ্লাসের বোতলে সংরক্ষণ করুন এবং সবসময় শুকনো চামচ ব্যবহার করুন। এই পদ্ধতিতে তেতুল মাসের পর মাস ফাঙ্গাসমুক্ত থাকে। চাটনির জন্যও লবণ এবং ভিনেগারের মিশ্রণ ব্যবহার করুন, যা প্রোটেস্ট কর্তৃপক্ষের মতে প্রাচীনকাল থেকে ভারতে প্রচলিত।

এই কৌশলগুলো শুধু স্বাদ রক্ষা করে না, বরং খাবারের পুষ্টিগুণও অটুট রাখে।শাকসবজি এবং সবুজের সংরক্ষণে কাপড়ের ব্যবহার একটি সাধারণ কিন্তু কার্যকরী রহস্য। ধনে বা পুদিনা পাতাগুলোকে ভেজা কাপড়ে মুড়ে রাখুন এটি অতিরিক্ত আর্দ্রতা শোষণ করে এবং ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করে। সবজিগুলোকে প্লাস্টিকের প্যাকেটে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন, কিন্তু প্রতি সপ্তাহে ফ্রিজ পরিষ্কার করুন যাতে কোনো অবশিষ্ট খাবার ফাঙ্গাসের জন্মস্থান না হয়।

Sreenidi Deccan FC: হাম্মাদকে নিয়ে আশার আলো দেখছেন ফ্যাবিও

গ্রীষ্মকালে সবজি কেনার পর তাদের ধুয়ে শুকিয়ে এয়ারটাইট জারে রাখুন। গ্লাসের জারগুলো ইকো-ফ্রেন্ডলি এবং খাবারের সতেজতা বজায় রাখে। বর্ষাকালে ফ্রিজারে শস্য এবং ডাল দু’দিন রাখুন—এটি কীট এবং ফাঙ্গাসের ডিম ধ্বংস করে।এই ঐতিহ্যবাহী কৌশলগুলো শুধু খাবার রক্ষা করে না, বরং পরিবেশ রক্ষা করে। আধুনিক ফ্রিজের পরিবর্তে মাটির কলসি বা ধাতুর পাত্র ব্যবহার করে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমান।