কলকাতা, ৮ অক্টোবর ২০২৫: পুজো, দীপাবলি কিংবা যেকোনও উৎসব বাঙালির কাছে মানেই মিষ্টির সমাহার। লাড্ডু, সন্দেশ, রসগোল্লা, কেক—তালিকা যেন শেষ হয় না। কিন্তু স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের জন্য উৎসব মানেই এক দোটানা। ক্যালোরি, চিনি আর ফ্যাটের ভয়ে অনেকেই মিষ্টি এড়িয়ে চলেন। তবে চিন্তা নেই! এখন এমন অনেক বিকল্প রয়েছে, যেখানে স্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা যায় দারুণ সুস্বাদু মিষ্টি। দেখে নিন কিছু হেলদি ফেস্টিভ সুইট আইডিয়া—
১. গুড়ের লাড্ডু (Jaggery Laddoo)
চিনির বদলে খাঁটি গুড় ব্যবহার করলে লাড্ডুর স্বাদ যেমন বাড়ে, তেমনই স্বাস্থ্যকর হয়। গুড় হজমে সাহায্য করে, শরীরে আয়রন যোগায়। নারকেল, তিল, চিনাবাদাম দিয়ে বানানো গুড়ের লাড্ডু উৎসবে পুষ্টিকর বিকল্প।
২. খেজুর ও বাদামের বুরফি (Dates & Nuts Barfi)
খেজুর প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি, তাই আলাদা করে চিনি দিতে হয় না। কাজু, কাঠবাদাম, পেস্তা মিশিয়ে বানানো এই বুরফি শিশু থেকে বড়—সবাইয়ের প্রিয় হতে পারে। শক্তি ও পুষ্টি দুটোই মেলে একসঙ্গে।
৩. ওটস সন্দেশ (Oats Sandesh)
ঐতিহ্যবাহী সন্দেশ এবার ওটসের ছোঁয়ায়। ছানার সঙ্গে মেশান ওটসের গুঁড়ো আর মধু। উপরে একটু কিশমিশ বা বাদাম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন। এই সন্দেশ যেমন ফাইবার সমৃদ্ধ, তেমনই সুস্বাদু।
৪. ফল-ভিত্তিক ক্ষীর (Fruit Kheer)
চিনির বদলে ব্যবহার করুন নারকেলের দুধ বা কম ফ্যাট দুধ এবং প্রাকৃতিক মিষ্টিকারক (যেমন স্টেভিয়া/খেজুর গুড়)। কিশমিশ, আপেল, কলা বা আনারস যোগ করলে ক্ষীরের স্বাদ দ্বিগুণ হবে।
৫. বেকড রসগোল্লা (Baked Rosogolla)
সাদা চিনি কমিয়ে ছানার রসগোল্লা বেক করে বানানো যায় এই স্বাস্থ্যকর মিষ্টি। উপরে হালকা মধু বা গুড়ের সিরাপ দিলে স্বাদে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়। ফ্যাট কম, প্রোটিন বেশি—ডায়েট ফ্রেন্ডলি অপশন।
৬. লো-শুগার গাজরের হালুয়া (Low Sugar Gajar Halwa)
শীতকালের মতোই উৎসবের সময়েও জনপ্রিয় গাজরের হালুয়া। এবার চিনি বাদ দিয়ে ব্যবহার করুন গুড় বা খেজুর। অল্প ঘি-তে ভেজে বাদাম পেস্তা দিয়ে সাজালে এই হালুয়া হবে হেলদি এবং মুখরোচক।
৭. চিয়া সিড পায়েস (Chia Seed Pudding/Payas)
দুধ বা বাদাম দুধে ভিজিয়ে রাখা চিয়া সিড দিয়ে তৈরি পায়েস এখন নতুন প্রজন্মের প্রিয়। এতে রয়েছে ওমেগা-৩, প্রোটিন ও ফাইবার। উৎসবের মেনুতে এটি হতে পারে একেবারে আধুনিক ছোঁয়া।
উৎসব মানেই আনন্দ আর মিষ্টি খাওয়া থেকে কেউ দূরে থাকতে চান না। তবে আজকের দিনে স্বাস্থ্য সচেতনতার কারণে বিকল্প মিষ্টির গুরুত্ব বেড়েছে। চিনির পরিবর্তে গুড়, খেজুর, মধু ব্যবহার করা এবং ফ্যাট কমিয়ে বাদাম-ফল যোগ করার মাধ্যমে মিষ্টি যেমন স্বাস্থ্যকর হয়, তেমনই রসনাতৃপ্তিও বজায় থাকে।
তাই এ উৎসবে খানদাবিদ্দি নেই, মিষ্টি খান, তবে স্বাস্থ্যকর মিষ্টি খান!