ধূমপান করেন? শুধু হার্ট-ফুসফুস নয়, মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গেও

‘ধূমপান ক্যান্সারর কারণ’, সবাই জানে, কিন্তু ক-জন মানে? ধূমপানের (Smoking) জেরে ক্যান্সারের ঝুঁকি তো বাড়েই, সেইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হার্ট, ফুসফুস সহ শরীরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের। দশকের পর দশক ধরে হয়ে আসা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ধূমপানের জেরে সরাসরি এবং সর্বপ্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের দাঁত। দাঁত ক্ষয়, চিকিৎসার পিরেও বিলম্বিত আরোগ্য এমনকি মুখের ক্যান্সার (Cancer) পর্যন্ত হতে পারে।

Advertisements

কীভাবে দাঁত ও মাড়িতে প্রভাব ফেলে ধূমপান?

   
  • সিগারেট (Cigarette) বা যেকোনো তামাকজাতীয় (Tobacco) দ্রব্য মাড়ির টিস্যুগুলিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ক্ষয়ে যায় দাঁত। দাঁতে কালো কালো ছোপ পড়ে। যা ব্রাশ করলেও যায় না।
  • ধূমপান লালা প্রবাহকে কমিয়ে দেয় এবং মুখের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে হ্রাস করে। পাচনতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় লালারস ক্ষরণ। যা কমে গেলে অ্যাসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা দেখা দেয়।
  • মাড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দিয়ে মুখের ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্যকে নষ্ট করে ধূমপান। যার ফলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • মাড়ির অস্ত্রোপচারের পরেও ধূমপানকারীদের দাঁতের স্বাস্থ্য ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
  • এসব রোগের পাশাপাশি মুখের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হল ধূমপান ও তামাকজাতীয় দ্রব্য।

কীভাবে মুখের যত্ন নেবেন ধূমপানকারীরা?

কেবলমাত্র ভালোভাবে মুখ ধোয়া বা ব্রাশ করলেই ধূমপানের ফলে হওয়া মুখের সমস্যা দূর করা সম্ভব না। তার জন্য সম্পূর্ণভাবে ধূমপান বন্ধ করা উচিৎ। তবে, এই টিপস গুলো মেনে চললে মুখের রোগ বা মুখের ক্যান্সার হওয়া আটকানো যেতে পারে।

১) দিনে দু-বার করে দাঁত মাজা আবশ্যক: দিনে দু-বার কমপক্ষে দু-মিনিট করে ব্রাশ করা ধূমপানকারীদের জন্য আবশ্যিক। ফ্লোরাইড এনামেলকে শক্তিশালী করে এবং ধূমপায়ীদের দাঁতের মধ্যে কোনও গর্ত বা ক্যাভিটি তৈরি হওয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।

২) ফ্লস ব্যাবহার করুন: শুধুমাত্র দাঁত মাজাই যথেষ্ট নয়। ধূমপানের ফলে দাঁতে জমে যাওয়া কালো চিটচিটে পদার্থ দূর কোর্টে ডেন্টাল ফ্লস ব্যাবহার করুন। দাঁতের ভেতরের অংশে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার কোর্টে এটি কার্যকর।

Advertisements

৩) অ্যালকোহল মুক্ত মাউথ ওয়াশ: অ্যালকোহল যুক্ত মাউথ ওয়াশ মুখকে শুকিয়ে দেয়। লালারস ক্ষরণ এবং মুখের ভালো ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। তাই অ্যালকোহল মুক্ত মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করুন।

৪) প্রচুর জল খান: দিনে বেশি পরিমাণে জল খেলে লালারস ক্ষরণ হয় এবং মুখে জমে থাকা খাদ্যকণা এবং চিনিকে ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ধূমপানকারীদের বেশিরভাগই মুখ-গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। তাঁদের উচিৎ বেশি পরিমাণে জল খাওয়া।

৫) ৬ মাস অন্তর দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: ধূমপানের কারণে আপনার মাড়ি বা দাঁতে কোনও সমস্যা দেখা দিলে দন্ত চিকিৎসকরা তা তৎক্ষণাৎ পরীক্ষা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারবেন। তাই প্রতি ৬ মাসে একবার করে দন্ত চিকিৎসকের (Dentist) কাছে যান।

৬) ছেড়ে দেওয়াই ভালো: গবেষণা এবং সার্ভেতে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ মানুষই বন্ধুবান্ধব বা সঙ্গদোষে ধূমপান শুরু করেছেন। কিন্তু আপনার স্বাস্থ্যের থেকে বড় আর কিছু নয়। ধূমপান আপনার শরীরে নানাভাবে ক্ষতি করে। তাই বন্ধু বা আপনার চেনা গন্ডিতে প্রাসঙ্গিক থাকতে ধূমপান করা অনাবশ্যক। এটি ছেড়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।