শুধুই রসিয়ে, কষিয়ে স্বাদে-গন্ধে খাওয়ার জন্য নয়, রসুনে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ (Health Benefits of Garlic), যা আপনার শরীর থেকে ত্বক ও চুলের সমস্যাও ঠিক করে দিতে পারে। রোজ ব্যবহারে কিভাবে সুস্থ থাকবেন, রইল রসুনের বহুমুখী উপকারিতা:
(১) রসুনের মধ্যে থাকা ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন, সেলেনিয়াম, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন ও পটাশিয়াম থাকে। এত কিছু থাকলেও রসুনের ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। রসুনের মধ্যে এগুলো থাকায় এর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরকে কোনও রকম ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকেও বাঁচতে সাহায্য করে।
(২) ওজন কমানোর জন্য রসুন খুবই উপকারী। শরীরের অ্যাডিপোজ কোষে সাধারণত ফ্যাট জমে। রসুন শরীরের বাড়তি মেদ জমতে দেয় না। এছাড়া শরীরের থার্মজেনেসিস প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে ফ্যাট বার্নিংয়েও সাহায্য করে। উপরন্তু অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
(৩) সর্দি, কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ থেকে মুক্তি পেতে রসুন সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২ কোয়া রসুন খেলে সর্দি-কাশির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
(৪) রসুনে অ্যালিসিন নামক একটি উপাদান আছে যা শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাটের অক্সিডেসন এর মাত্রা কমায়। ফলে কোলেস্টরলের মাত্রা কমে এবং হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও কমে যায়।
(৫) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রসুনের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
(৬) যাদের হাইপার টেনশন আছে তারা প্রতিদিন ২ কোয়া করে রসুন খেলে উপকার পাবেন।
(৭) রসুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিক্সিডেন্ট থাকে। শরীরের কোনও কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বাঁচায়।
(৮) রসুনের কর্মক্ষমতা এতটাই যে অ্যালজাইমার বা ডিমেনশিয়া রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করতে সাহায্য করে। শরীরে ফ্রি র্যাড়িক্যালের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি ডিএনএ-কে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বাঁচাতেও রসুনের জুরি মেলা ভার।
(৯) রসুনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ক্ষমতা চোখ ও কানের ইনফেকশন কমায়।
(১০) ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি বা কোনও দাগ – ছোপের সমস্যাও রসুন মিটিয়ে দিতে পারে। ত্বককে আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এমনকী ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তেও দেয় না রসুন।
(১১) চুলের সমস্যাতেও রসুন অপরিহার্য। চুল পড়া, খুসকি বা নতুন চুল গজাতেও রসুন সাহায্য করে।
(১২) রসুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুস, লিভার, পাকস্থলী, প্রস্টেট, ব্লাডার ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা পেপটিক আলসার কমায়।
(১৩) রসুন শরীরের ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়াকে বাড়তে দেয় না ফলে রেচনতন্ত্র ভালো থাকে ও ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
(১৪) হজমের সমস্যায়ও রসুন ইনটেস্টিনাল ওয়ার্ম গুলোকে মেরে ফেলে আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
(১৫) আমাদের শরীরে অনেক রকমের ব্যাকটেরিয়া থাকে। রসুন শরীরের আপকারী ব্যাকটেরিয়াকে মেরে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়াকে বাঁচিয়ে রাখে।
সুতরাং, রান্নায় বা রোজ সকালে খালি পেটে যদি ২ কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়া যায় তাহলে আপনার শরীর রোগমুক্ত সতেজ থাকবে।