২৫ নভেম্বর শুরু শীতকালীন অধিবেশন, বিরোধীদের আক্রমণ নিয়ে সতর্ক তৃণমূল

চলতি মাসের ২৫ নভেম্বর (November 25) থেকে শুরু হতে চলেছে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন (Winter Session)। এই অধিবেশনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীদের…

Winter Session November 25

চলতি মাসের ২৫ নভেম্বর (November 25) থেকে শুরু হতে চলেছে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন (Winter Session)। এই অধিবেশনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েছে। এবার শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধীদের ত্রিফলায় বিঁধতে শাসকদল গুছিয়ে প্রশ্নপর্ব সাজাতে চলেছে। বিশেষ করে গত এক যুগে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়নমূলক কাজের পরিসংখ্যান তুলে ধরে, বিরোধীদের আক্রমণাত্মক মনোভাবের জবাব দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

সরকার পক্ষের পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্বাস্থ্য, সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার—এই তিন দপ্তরের উন্নয়নমূলক কাজের নিরিখে প্রশ্ন রাখা হবে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য দপ্তরের যে অসংখ্য পদক্ষেপ গত এক দশকে রাজ্যজুড়ে নেয়া হয়েছে, তা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং ভূমি সংস্কার দপ্তরের ক্ষেত্রেও সরকারের নানা উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের পরিসংখ্যান সামনে আনা হবে।

   

রাজ্য সরকারকে নিয়ে গত কয়েক মাসে বিরোধীরা বিশেষ করে বিজেপি ও বামেরা লাগাতার সমালোচনা করে এসেছে। আর জি কর-কাণ্ডের পর থেকেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেছে বিরোধীরা। বামেদের তরফে এই বিষয়টি নিয়ে চরম বিরোধিতা করা হয়েছে এবং আগামী শীতকালীন অধিবেশনে তারা এই বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় উত্তাপ বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেসও জানিয়ে দিয়েছে, তারা এসব বিরোধী আক্রমণের সঠিক জবাব দিতে প্রস্তুত।

সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তর এবং ভূমি সংস্কার দপ্তর নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্যও তৃণমূল কংগ্রেস প্রস্তুত। বিজেপি দাবি করেছে, রাজ্য সরকার মুসলিম তোষণের নীতি গ্রহণ করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে, বিরোধীদের এই অভিযোগের পাল্টা হিসাবে সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা এবং সংখ্যালঘু উন্নয়নের ক্ষেত্রে এর কার্যক্রমের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হবে।

এছাড়া, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর নিয়ে বিরোধীরা কসবা সহ বিভিন্ন জমি দখল ইস্যুতে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে। এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়েই শাসকদল প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। শাসকদল মনে করছে, বিরোধীরা যাতে এসব বিষয়ে অতিরঞ্জিত মন্তব্য করে, তার মোকাবিলা করতে তারা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে।

অভিজ্ঞ মহলের মত, রাজ্যের শাসক দল বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য একটি প্রস্তুতির পর্যায় হিসেবে দেখতে চাইছে। এর পাশাপাশি, আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেস একটি নিন্দা প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, এই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হতে পারে বিধানসভায়।

২৬ নভেম্বর, সংবিধান দিবসের দিন, তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভায় বিশেষ পর্ব আয়োজন করবে। ওই দিন সংবিধানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারের কাছে বিশেষভাবে এটি তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে, ওয়াকফ বিল সম্পর্কিত কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়েও আলোচনা হতে পারে, যা ইতিমধ্যেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই সব বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে, তৃণমূল কংগ্রেস শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম থেকেই শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে চাইছে।