‘অনুপ্রবেশ রুখতে হলে জমি দিতে হবে’— মমতাকে পালটা শুভেন্দুর

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা নিয়ে (Suvendu Adhikari) আবারও রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তাপ। কেন্দ্র বনাম রাজ্য সংঘাত যেন নতুন কোনও বিষয় নয়, তবে এই বার সেই সংঘাতের…

Why Did West Bengal Fail to Provide 540 KM to Home Ministry? Suvendu Questions

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা নিয়ে (Suvendu Adhikari) আবারও রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তাপ। কেন্দ্র বনাম রাজ্য সংঘাত যেন নতুন কোনও বিষয় নয়, তবে এই বার সেই সংঘাতের কেন্দ্রে উঠে এসেছে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, অর্থাৎ বিএসএফ (BSF)। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশ থেকে পুশব্যাকের অভিযোগ ও সীমান্ত পরিস্থিতিকে সামনে রেখে এদিন ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দাগলেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে প্রশ্ন তুললেন বিএসএফ-এর ভূমিকা নিয়েও।(Suvendu Adhikari) 

বুধবার, রাজপথে মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিছিল শেষে ডোরিনা ক্রসিংয়ে অনুষ্ঠিত সভা থেকে তিনি বলেন, ‘বাংলায় অনুপ্রবেশ হলে তার দায় বিএসএফ-এরই। সীমান্ত তো তারা রক্ষা করে, তার দায় রাজ্যের নয়।’ তাঁর অভিযোগ, দেশের অভ্যন্তরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলি(Suvendu Adhikari) যেমন সিআইএসএফ, বিএসএফ, সিআরপিএফ, সবই কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে। এমনকি বিমানে কেউ এলে, তা নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রের অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রক। তাহলে সীমান্তে যদি অনুপ্রবেশ হয়, তাহলে সেই দায় রাজ্য সরকারের নয়, বরং সরাসরি কেন্দ্র ও তার অধীন নিরাপত্তা বাহিনীর— এমনটাই দাবি তাঁর।(Suvendu Adhikari) 

   

তৃণমূলের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও বহুবার অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া সুরে আক্রমণ শানিয়েছে তারা। আবার বিজেপিও এই একই ইস্যু তুলে তৃণমূলকে (Suvendu Adhikari) কাঠগড়ায় তুলেছে, বারবার অভিযোগ এনেছে ‘তৃণমূল অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেয়’।

এই আবহেই পালটা বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। (Suvendu Adhikari) তাঁর কটাক্ষ, ‘আপনি (মুখ্যমন্ত্রী) বলছেন অনুপ্রবেশ রুখতে বিএসএফ দায়ী। কিন্তু আপনি নিজে তো বিএসএফ-কে জমিই দেননি। ২০১৬ সাল থেকে কেন্দ্র অনুরোধ করে আসছে, কিন্তু রাজ্য সরকার ৫৪০ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে জমি হস্তান্তর করেনি।’ তাঁর দাবি, বিএসএফ সম্পূর্ণ দায়িত্ব তখনই নিতে পারে, যখন তাদের পূর্ণ জমি ও সময় দেওয়া হবে কাঁটাতার বসানোর জন্য। নাহলে শুধু অভিযোগ করে রাজনীতি করাই হচ্ছে, বাস্তবে সমাধান চাওয়া নয়।(Suvendu Adhikari) 

Advertisements

এদিকে, এই বিতর্কের মাঝেই নবান্ন কিছুটা নমনীয় মনোভাব(Suvendu Adhikari) দেখিয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, সম্প্রতি রাজ্য সরকার বিএসএফ-কে সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর জন্য ৩৫৬ একর জমি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাশাসকদের কাছে। অর্থাৎ, দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুরোধ আংশিক মেনে নিয়েছে রাজ্য।

রাজনীতির কারচুপি থেকে বেরিয়ে এই বিষয়ে বাস্তব চিত্র হল, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর কয়েকটি জেলাতে এখনও বহু জায়গায় কাঁটাতার নেই। চাষের জমি, বসতি, বনাঞ্চলসহ নানা কারণে সেখানে এখনও ‘ফাঁকা জায়গা’ রয়ে গিয়েছে, যা অনুপ্রবেশের পথ সহজ করে তোলে। কাঁটাতার বসাতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বার্থ রক্ষা, জমির ক্ষতিপূরণ এবং নিরাপত্তার ভারসাম্য— সবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তবে এই সব বিষয় বাস্তবের পরিসরে থাকলেও, রাজনৈতিক ময়দানে অনুপ্রবেশ এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। মমতার বক্তব্যে কেন্দ্র ও বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে কড়া সুর যেমন আছে, তেমনই শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়াতেও রয়েছে কৌশলী চাপ সৃষ্টির প্রয়াস। আগামী দিনে সীমান্তরক্ষা ও অনুপ্রবেশ রোধ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের সহযোগিতা আদৌ কতটা বাস্তবায়িত হয়, তা দেখতে হবে সময়ের স্রোতে। তবে এখনই বলা যায়, বিএসএফ-কে ঘিরে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানিতে উত্তপ্ত হতে চলেছে বঙ্গ রাজনীতি।