বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা কবে? এখন এই প্রশ্নটি রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, আর তার আগে রাজ্য সভাপতির পদে কে আসবেন, তা নিয়ে এখন ব্যাপক আলোচনা চলছে। সুকান্ত মজুমদার কি আবার দলের রাজ্য সভাপতি পদে থাকবেন, নাকি বিজেপি নতুন কাউকে দায়িত্ব দেবে—এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। তবে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ কিছু ক্লু দিয়েছেন, যা থেকে কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh) জানান, “আমার কাছেও দলের কর্মীরা এই প্রশ্ন করছেন। তবে এটি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন। সেটা সময়মতো এবং নিয়ম মেনেই হবে।” তিনি আরও বলেন, “কথাবার্তা চলছে, তবে এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি।” দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, রাজ্য সভাপতির পদ নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, সবকিছুই সঠিক সময়ে এবং দলের শৃঙ্খলা মেনে সিদ্ধান্ত হবে।
বিজেপিতে প্রতি তিন বছর অন্তর সাংগঠনিক নির্বাচন হয়, এবং সেই প্রক্রিয়া বর্তমানে চলছে। দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই নয়, দেশের অন্যান্য রাজ্যেও একই নিয়মে চলছে। তিনি বলেন, “যে নেতা সর্বভারতীয় নেতৃত্বের কাছে উপযুক্ত মনে হবে, তাকেই দায়িত্ব দেওয়া হবে।” সুকান্ত মজুমদারের তিন বছর পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর এখন এই পদে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু দলের অভ্যন্তরে অনেকেই মনে করছেন, আগামী নির্বাচনের আগে কোনও ধরনের হঠাৎ পরিবর্তন চায় না বিজেপি। বরং “দের আয়ে পর দুরস্ত আয়ে”র নীতি অনুসরণ করতে চাইছে তারা।
এদিকে, দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) সক্রিয় ভূমিকা দেখে অনেকেই মনে করছেন, পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হিসেবে তাঁকেও আবার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। যদিও দিলীপ ঘোষ নিজে এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি জানান, “আমি গত ১০ বছর একই রকম ফর্মে আছি। যারা আমাকে জানেন না, তারা হয়তো এই কথা বলতে পারেন।”
রাজ্য সভাপতি নিয়ে এই সিদ্ধান্ত কবে হবে, সে প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ আরও জানান, “নমিনেশন পর্বের পর রাজ্য সভাপতি নির্বাচন হবে। এই নমিনেশন এখনো হয়নি, তবে একবার নমিনেশন শুরু হলে খুব শিগগিরই নির্বাচনেরও দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাবে।”
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর, সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকে অনেক সময় গড়িয়েছে, এবং সুকান্তের নেতৃত্বে বিজেপি রাজ্য রাজনীতিতে অনেক কিছু অর্জন করেছে। তবে এখন দলের অন্দরে এই বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে। কেউ কেউ মনে করছেন, সুকান্ত মজুমদারকে আগামী বিধানসভা ভোট পর্যন্ত রাখা হতে পারে, কারণ দল নতুন করে কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না।
তবে, দলীয় সংগঠন এবং বিভিন্ন জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণার পর যেসব ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তা আগামী ভোটের আগে যেন আরও বাড়িয়ে না দেওয়া হয়, এই চিন্তা থেকেই হয়তো বিজেপি নতুন কোনো ঝাঁকুনি দিতে চাইছে না।
সব মিলিয়ে, বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি নিয়ে অপেক্ষা বাড়ছে। দিলীপ ঘোষের কথায়, “সব সিদ্ধান্ত দিল্লি থেকেই নেওয়া হবে,” তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য সবাই দিল্লির দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।