আরজি কর ধর্ষণ-খুনে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় পলিগ্রাফ টেস্টে কী বলল?

আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরপরই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। রবিবার প্রেসিডেন্সি জেলে সেই সঞ্জয় রায়েরই পলিগ্রাফ টেস্ট হয়। জানা…

What Kolkata rape-murder accused Sanjay Roy told CBI during polygraph test

আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরপরই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। রবিবার প্রেসিডেন্সি জেলে সেই সঞ্জয় রায়েরই পলিগ্রাফ টেস্ট হয়। জানা গিয়েছে, লাই ডিটেক্টরের সামনে নিজের দোষ কবুল করেছে সঞ্জয়। এছাড়াও জানিয়েছে, ঘটনার দিন সে কোথায় কোথায় গিয়েছিল, কি করেছিল।

ঘটনার দিন সঞ্জয় রায় দু’টি যৌনপল্লিতে গেয়েছিল বলে তদন্তে আগেই জানা গিয়েছিল। সিবিআই সূত্রের খবর, পলিগ্রাফ টেস্টেও তা স্বীকার করে নিয়েছে সঞ্জয়। তবে ধৃতের দাবি, দু’টি যৌনপল্লীতে গেলেও সেখানে কারও সঙ্গে সঙ্গম করেনি সে। বরং নিজের প্রেমিকার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছিল, তার থেকে নগ্ন ছবিও চেয়েছিল। পরে হাসপাতালে আসার সময় এক মহিলাকে রাস্তায় উত্ত্যক্তও করেছিল।

   

তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের আগে ঠিক কী কী করেছিল সঞ্জয় রায়? পলিগ্রাফ টেস্টের পর সূত্র মারফৎ জানা গেছে, রাত ১১.১৫ নাগাদ সে তার এক বন্ধুর সঙ্গে মদ পান করেছিল। তারপর প্রথমে গেয়েছিল উত্তর কলকাতার যৌনপল্লী সোনাগাছিতে। তারপর সেখান থেকে সে যায় দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় অবস্থিত যৌনপল্লীতে। এখানে সঞ্জয়ের বন্ধু সঙ্গম করলেও সে বাইরে দাঁড়িয়েছিল ও প্রেমিকার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছিল। কয়েক ঘণ্টা সেখানে সময় কাটানোর পর তারা বেরিয়ে আসে, রাস্তায় এক মহিলাকে উত্ত্যক্ত করে। এরপর ভোট ৪টের কিছু আগে সঞ্জয় পৌঁছয় আরজি কর হাসপাতালে। সোজা চলে যায় সেমিনার হলে। সেখানের সিসিটিভি ফুটেজেই তাকে দেখা গেয়েছে।

পলিগ্রাফ টেস্টে সঞ্জয় জানিয়েছে যে, সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসক তখন ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁকে দেখা মাত্রই যে শারীরিক নিগ্রহ শুরু করে। এরপর মারধর এবং ধর্ষণের পর তাঁকে খুন করে। তারপর সঞ্জয় নিজের এক পুলিশ বন্ধুর বাড়ি চলে যায়। সিবিআই কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পেরেছিল যে, সঞ্জয়ের ওি পুলিশ বন্ধুর নাম অনুপম দত্ত।

নবান্ন অভিযান অবৈধ, বিজেপি ‘শকুনের রাজনীতি’ করছে, কটাক্ষ কুনালের

সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে যে, সঞ্জয় রায়ের মোবাইল ফোনে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পর্নোগ্রাফিক মিলেছে, যার মধ্যে ভাইবোনের মধ্যে যৌন ক্রিয়াকলাপের ভিডিও রয়েছে। এটি সিবিআইকে রায়ের মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন করতে প্ররোচিত করে।

সিসিটিভি ফুটেজ এবং ছেঁড়া ব্লু-টুথ হেডফোনের সূত্র ধরেই প্রথমে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বর্তমানে আরজি করের তদন্তে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনার আগের দিন নির্যাতিতার ওপর নজর রেখেছিল সে। হাসপাতালের করিডরের সিসি ক্যামেরায় এই ছবি ধরা পড়েছে। যে সিসিটিভি ফুটেজের কথা বলা হচ্ছে তাতে নাকি দেখা গেছে, ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ৮ তারিখ সঞ্জয় রায় চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে নির্যাতিতার ওপর নজর রাখছিল। ওই দিন বেলা ১১টার সময় চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে ছিল সঞ্জয়। সেই সময় সেখানে নির্যাতিতা ছাড়াও আরও ৪ জন জুনিয়র ডাক্তার ছিলেন। সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, সঞ্জয় তাঁদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে ছিল। তার পরের দিনই ভোর রাতে ওই নৃশংস ঘটনা ঘটায় সঞ্জয়।

আরজি করের সেই রাতের সেমিনার হলের দিকে যাওয়ার একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছেইরাল ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, গলায় হেডফোন, হাতে হেলমেট নিয়ে আরজি করের করিডর ধরে হেঁটে যাচ্ছে সঞ্জয়। ওই করিডরের শেষ প্রান্তেই রয়েছে সেমিনার হল। গত ৯ অগস্ট ভোরে ওই সেমিনার হল থেকেই ডাক্তারি ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল।