২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Elections) আগে পশ্চিমবঙ্গে ভোটারদের সুবিধার জন্য প্রায় ১৪,০০০টি নতুন ভোটকেন্দ্র গঠনের প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে প্রায় ৭৮,০০০ ভোটকেন্দ্র রয়েছে, যা ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ছড়িয়ে আছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, যেসব ভোটকেন্দ্রে ১,২০০ জনের বেশি ভোটার রয়েছেন, সেগুলি ভাগ করা হবে যাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া আরও সহজ ও স্বচ্ছ হয়। এর ফলে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৯২,০০০ হতে পারে।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটকেন্দ্র পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত আলোচনার জন্য আগামী ২৯ আগস্ট বিকেল সাড়ে তিনটায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে নতুন বুথ বরাদ্দ নিয়ে মতামত নেওয়া হবে এই বৈঠকে।
নির্বাচনী মহল মনে করছে, বুথ সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সংগঠনিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলির, বিশেষ করে বিরোধীদের, বুথ লেভেল এজেন্ট (BLA) নিয়োগে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভোটগ্রহণের সুষ্ঠু আয়োজনের জন্য বুথের সংখ্যা বৃদ্ধি করলেও এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক দলের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সামনে এসেছে। ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনা প্রক্রিয়ায় গুরুতর অনিয়মের অভিযোগে চারজন নির্বাচনী আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্র এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়না কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা দুইজন ERO (Electoral Registration Officer) এবং দুইজন AERO (Assistant ERO)-কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া আধিকারিকদের নাম হল:
দেবত্তম দত্ত চৌধুরী (ERO, বারুইপুর পূর্ব)
তথাগত মণ্ডল (AERO, বারুইপুর পূর্ব)
বিপ্লব সরকার (ERO, ময়না)
সুদীপ্ত দাস (AERO, ময়না)
এই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা লগইন তথ্য শেয়ার করার পাশাপাশি ভোটার তালিকার নিরাপত্তা নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন। এর ফলে ভোটার তালিকায় অনিয়মের ঘটনা ঘটে। যদিও নির্বাচন কমিশন এই অনিয়মের জন্য এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্য সরকার আপাতত তা না করে শৃঙ্খলাজনিত ব্যবস্থা নেওয়ার পথ বেছে নিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা এবং বুথ পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সময়সীমার মধ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন ও বুথ পুনর্গঠন সম্পন্ন করার জন্য জোর দেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ভোটকেন্দ্র বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বুথ বৃদ্ধি ভোটারদের জন্য ইতিবাচক হলেও, এটি সংগঠনগুলির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। আগামী ২৯ আগস্টের সর্বদলীয় বৈঠকে এই বিষয়ে বিভিন্ন দলের প্রতিক্রিয়া নজরে থাকবে।