মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার ঘোষণা করেছেন, সম্প্রতি প্রকাশিত বার্ষিক জরিপ এর ফলাফল অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ ফের ভারতের মাইক্রো, এমএসএমই (স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) খাতে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। তিনি বলেন এই তথ্য আবারও প্রমাণিত করেছে যে, পশ্চিমবঙ্গ “শিল্প উৎপাদন” খাতে দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে বলেন, “আমরা গর্বিত যে, সম্প্রতি প্রকাশিত জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের বার্ষিক জরিপে পশ্চিমবঙ্গ একাধিক ক্ষেত্রে দুর্দান্ত ফলাফল করেছে এবং তা রাজ্যের নারী-শক্তির অসাধারণ অবদানকেও তুলে ধরেছে।”
বার্ষিক জরিপের গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান:
১.শিল্প উৎপাদন খাতে কর্মী: পশ্চিমবঙ্গ ১৩.৮১ শতাংশ কর্মীকে শিল্প উৎপাদন খাতে নিয়োজিত করেছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
২. মহিলাদের শেয়ার: পশ্চিমবঙ্গের ৩৬.৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান মহিলা নেতৃত্বাধীন, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
৩. মহিলাদের কর্মসংস্থান: রাজ্যে ১২.৭৩ শতাংশ মহিলা কর্মী অ-সংস্থাপন খাতে কর্মরত, যা অন্য কোনো রাজ্যের তুলনায় বেশি।
এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ মোট ১৬.০২ শতাংশ “উৎপাদন খাত” প্রতিষ্ঠান এবং ১৩.০৯ শতাংশ “অন্যান্য সেবা” খাতে প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যা রাজ্যের শক্তিশালী কর্মসংস্থান ব্যবস্থা এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবদানকে তুলে ধরে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এই জরিপের ফলাফল পশ্চিমবঙ্গের শিল্পখাত এবং নারী উন্নয়ন কার্যক্রমের সফলতার বড় উদাহরণ। তিনি বলেছেন এই সাফল্য সারা দেশের জন্য এক বড় বার্তা, যেখানে মহিলাদের জন্য অধিক কর্মসংস্থান এবং সাশ্রয়ী উদ্যোক্তা পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
অ-সংস্থাপন খাতের বৃদ্ধি
বার্ষিক জরিপে আরও জানানো হয়েছে যে, অ-সংস্থাপন খাতে মোট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১২.৮৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬.৫০ কোটি থেকে ৭.৩৪ কোটি হয়েছে। এর মধ্যে “অন্যান্য সেবা” খাতে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ২৩.৫৫ শতাংশ, এবং উৎপাদন খাতে বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
রাজ্য ভিত্তিক পরিসংখ্যান
দেশের সর্বাধিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ-এ, এরপর পশ্চিমবঙ্গ এবং মহারাষ্ট্র অবস্থান করছে। পশ্চিমবঙ্গের উদীয়মান শিল্প-খাত এবং দক্ষ শ্রমিক শক্তির এই সাফল্য রাজ্য সরকারের পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের ফলাফল যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর মতে, “পশ্চিমবঙ্গের এই সাফল্য সরকারের শিল্পনীতির প্রতিফলন। আমাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা প্রযুক্তি নয়, বরং গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র শিল্প ক্ষেত্রেও মহিলাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।”
এছাড়াও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ এবং মাইক্রো ক্রেডিট স্কিম এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের তরুণদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে।
এই সাফল্য রাজ্যের অর্থনীতি এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।