প্রায় সাত বছর পরে রাজ্যে প্যারা টিচার (Para Teacher) নিয়োগে আইনি জট কাটলো। রাজ্যের উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আসন প্যারা টিচারদের জন্য বরাদ্দ রাখায় সরকারের ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তিকে মান্যতা দিল হাইকোর্ট। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য শুক্রবার তার রায়ে বলেন, প্যারা টিচার বা পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য সংরক্ষণ সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এতে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত।
প্যারা টিচার নিয়োগ, তাদের কাজের ধরন থেকে শুরু করে কাজের গুরুত্ব-সবটাই অন্যদের থেকে আলাদা। তাই ২০১৭ সাল থেকে স্পেশ্যাল এডুকেটর, সম্প্রসারক, সম্প্রসারিকা, মুখ্যসহায়ক এবং সহায়িকাদের দায়ের করা সব মামলা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি ভট্টাচার্য প্যারা টিচারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বাম আমলে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে ৫০ হাজারেরও বেশি পার্শ্বশিক্ষক কর্মরত ছিলেন। কিন্তু অবসর ও অন্যত্র চাকরি পাওয়ার কারণে সেই সংখ্যা কমতে কমতে এখন ৪২ হাজারে ঠেকেছে।
সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার ব্যাপারে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন অন্যপক্ষ। আদালতের বক্তব্য, প্যারা টিচারদের এই সংরক্ষণের আওতায় ঢোকার জন্য মামলা দায়ের করা সর্বশিক্ষা মিশনের অন্তগর্ত স্পেশ্যাল এডুকেটর, সম্প্রসারক, সম্প্রসারিকা সহ অন্যরা সমগোত্রীয়- এমন কোনও নথি দিতে পারেনি। মামলাকারীরা রাজ্যের ওই বিজ্ঞপ্তি খারিজ এবং ওই সংরক্ষণের আওতায় তাদের যুক্ত করার দাবিতে আদালতে গিয়েছিলেন।
মামলাকারীদের যুক্তি অনুযায়ী, সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের সঙ্গে তারাও যুক্ত। তাই এই অধিকার তাদেরও প্রাপ্য। যদিও প্যারা টিচারদের তরফে আইনজীবী সৌমিক প্রামাণিকের যুক্তি, প্যারা টিচারদের নিয়োগ হয় জেলা প্রজেক্ট অফিসারের মাধ্যমে। ফলে তাদের নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ কম। এদের প্রতিদিন ক্লাস করাতে হয়। তাঁদের পরীক্ষা ও খাতা দেখার মতো কাজেও ব্যবহার করা হয়, সেই সংক্রান্ত নথিও আইনজীবী আদালতে তুলে দেন।