কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক (West Bengal HS Exam) শিক্ষা সংসদ এ বার পরীক্ষা পদ্ধতিতে বড় রদবদল আনল। দীর্ঘদিন ধরেই প্রাথমিক টেট এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-র পরীক্ষায় ওএমআর শিট প্রকাশ নিয়ে আদালত পর্যন্ত মামলা গড়িয়েছিল। স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষা সংসদ চাইছে একেবারে শুরুতেই যে কোনও সন্দেহ বা বিতর্কের অবসান ঘটাতে। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম সেমেস্টার পরীক্ষার ফল অনলাইনে প্রকাশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ওএমআর শিট প্রকাশ করা হবে।
সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, “পরীক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। পরীক্ষার্থীরা যাতে নিজেরাই বুঝতে পারে তারা কোন প্রশ্নে কী উত্তর দিয়েছে এবং তা মূল্যায়নে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, সেই সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।”
ওএমআর শিট আপলোড নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল সংসদকে। তবে সম্প্রতি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা সংসদের পোর্টালে লগইন করে ওই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট ডাউনলোড করতে পারবেন। এর পর সেগুলি সফট কপি আকারে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে অথবা প্রিন্ট আউট দিয়ে হাতে তুলে দেওয়া হবে।
সংসদ থেকে জানানো হয়েছে, একসঙ্গে ৬টি পরীক্ষার ওএমআর শিট প্রকাশ করা হবে। প্রায় ৭০০০ স্কুলে ডিজিটাল ফরম্যাটে (PDF) পাঠানো হবে তথ্য। এর মাধ্যমে প্রত্যেক পরীক্ষার্থী তার নিজের উত্তরপত্র পর্যালোচনা করার সুযোগ পাবে।
উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম সেমেস্টার পরীক্ষা শুরু হবে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। এই বছরই প্রথমবার সেমেস্টার ভিত্তিক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। ফলে পরীক্ষার কাঠামোতেও আসছে বড় পরিবর্তন।
শুধু পরীক্ষার তারিখ বা ওএমআর শিট প্রকাশ নয়, বর্ষা ও বন্যার আশঙ্কা মাথায় রেখে বিশেষ গাইডলাইন পাঠানো হয়েছে প্রতিটি জেলায়। যাতে জরুরি পরিস্থিতিতেও পরীক্ষা নির্বিঘ্নে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে জোর দিচ্ছে সংসদ।
টেট এবং এসএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। অসংগতি ও মামলার কারণে বারবার জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তাই সংসদ এবার চাইছে শুরুতেই পরীক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে। ওএমআর শিট প্রকাশের মাধ্যমে প্রতিটি ছাত্রছাত্রী জানতে পারবে তারা কী উত্তর দিয়েছে এবং কীভাবে মার্কস পেয়েছে।
ফলে এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই পরীক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে স্বচ্ছতা যেমন বাড়বে, তেমনি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থাও তৈরি হবে।