জাল ওষুধের (Fake Medicine) বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবার বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন জাল ওষুধের ব্যবসার বিরুদ্ধে গত কিছুদিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে এবং বহু জায়গা থেকে জাল ওষুধ (Fake Medicine) উদ্ধারও করেছে। এখন এই সমস্যার মোকাবিলায় নবান্ন, বিজেপি শাসিত রাজ্য বিহার ও উত্তর প্রদেশের সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে।
চিঠিতে প্রশাসন আবেদন করেছে, যে সমস্ত রাজ্য থেকে জাল ওষুধ (Fake Medicine) তৈরি হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করছে, তাদের থেকে তদন্ত রিপোর্ট পাঠানো হলে পশ্চিমবঙ্গের তদন্ত প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে এবং দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
জানা গেছে, বিহার, উত্তর প্রদেশ, এবং কিছু অন্যান্য রাজ্য থেকে জাল ওষুধ পশ্চিমবঙ্গে আসছিল। আমতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং মালদহের বিভিন্ন এলাকা থেকে জাল ওষুধ (Fake Medicine) উদ্ধার করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযানে বহু জাল ওষুধ বিক্রেতাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ড্রাগ কন্ট্রোল ও সিআইডি যৌথভাবে এই সমস্ত অপরাধের তদন্ত শুরু করেছে।
নবান্ন সূত্রে আরও বলা হয়েছে, চিঠির মাধ্যমে বিহার ও উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে আবেদনের পাশাপাশি, দিল্লি সরকারকেও একই ধরনের চিঠি দেওয়া হবে। রাজ্য সরকার চাইছে, কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা পাওয়ার মাধ্যমে তারা যেন সারা দেশে জাল ওষুধের বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
এই তদন্তে সিআইডি নেমে যাওয়ার পর, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও উঠে এসেছে। জানা গেছে, জাল ওষুধ (Fake Medicine) তৈরি এবং বিপণনের একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, যা বিভিন্ন রাজ্যকে সংযুক্ত করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই নেটওয়ার্কের গভীরে যাওয়ার জন্য এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোকে সাহায্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের মাধ্যমে চলতি বছরের শুরুতে বেশ কয়েকটি বড় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। গত কয়েক মাসে হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, এবং মালদহের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণে জাল ওষুধ (Fake Medicine) উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধরনের ওষুধও পাওয়া গেছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। এসব ওষুধ সাধারণত খুব সহজে বাজারে চলে আসে, যার ফলে মানুষের অজান্তে তাদের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই পদক্ষেপে একদিকে যেমন জাল ওষুধের ব্যবসা বন্ধ করা যাবে, তেমনি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের সুরক্ষাও নিশ্চিত হবে। সরকার আশা করছে, বিহার ও উত্তর প্রদেশ সরকার দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট পাঠাবে, যা পশ্চিমবঙ্গে তদন্তের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।
এছাড়া, রাজ্য সরকার এই তদন্তের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজও শুরু করেছে। সামাজিক মাধ্যম এবং প্রচারের মাধ্যমে রাজ্য সরকার জানাচ্ছে, মানুষ যেন জাল ওষুধের বিষয়ে সতর্ক থাকে এবং অনলাইনে কিংবা অবৈধ পথের মাধ্যমে কেনাকাটা করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি শাসিত বিহার ও উত্তর প্রদেশ সরকার কি সত্যিই পশ্চিমবঙ্গের এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করবে? রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, তারা যথাসময়ে রিপোর্ট পাঠাবে এবং যৌথভাবে সারা দেশে জাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো সম্ভব হবে।
এত সব পদক্ষেপের পরও, সাধারণ মানুষদের সতর্ক থাকতে হবে এবং শুধুমাত্র অনুমোদিত ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে হবে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন অবৈধ ওষুধের ব্যবসা বন্ধ হবে, তেমনি মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে।
এছাড়া, এই অভিযানের ফলে সারা দেশে জাল ওষুধের (Fake Medicine) বিরুদ্ধে এক বড় বার্তা যাবে এবং সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করা হচ্ছে, এবং আশা করা যাচ্ছে যে অন্যান্য রাজ্যগুলোও এই অভিযানে অংশগ্রহণ করবে, যার মাধ্যমে দেশজুড়ে জাল ওষুধের বিরুদ্ধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে।