মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসদে কাগজ ছিঁড়ার ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন নিজেই

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট অধিবেশন চলাকালীন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বিতর্কিত মুহূর্তের কথা স্মরণ করেন, যখন তিনি সংসদে কাগজ ছিঁড়ে ছিলেন। বিজেপি বিধায়কদের অনুপস্থিতির বিষয়ে…

TMC to Meet at Netaji Indoor Under Supremo Mamata Banerjee's Leadership Next Weeky

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট অধিবেশন চলাকালীন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বিতর্কিত মুহূর্তের কথা স্মরণ করেন, যখন তিনি সংসদে কাগজ ছিঁড়ে ছিলেন। বিজেপি বিধায়কদের অনুপস্থিতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেন এবং তার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সংসদে বিরোধী দল। কিন্তু, যখন সেখানে কোনো বৈঠক হয়, আমাদের সাংসদরা উপস্থিত থাকেন।” তিনি যোগ করেন, “গতকাল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সংসদ কক্ষে কাগজ ছিঁড়েছিলেন, যা নিয়ে শাসকদল প্রশ্ন তুলেছিল। তখন বিজেপি তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলেছিল, আমি সংসদে কাগজ ছিঁড়েছিলাম।”

   

এদিন, মুখ্যমন্ত্রী সংসদে কাগজ ছিঁড়ে দেওয়ার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, “আমি তখন একা ছিলাম সংসদে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছিল না। একাধিকবার নোটিস দেওয়ার পরও আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। ২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ৩৯ শতাংশ ভোট পাওয়ার পরেও আমাকে একা হয়ে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সেই সময়ে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস—সব দল একযোগে আমাকে কথা বলতে দিচ্ছিল না। আমি তখন কাগজ ছিঁড়েছিলাম, কারণ আমার কোনো কথা শোনা হচ্ছিল না।”

মমতা আরও বলেন, “এখন সবাই তো প্রতিদিন প্রশ্ন করে। কিন্তু, আমি তো তাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। সংসদে তখন একা ছিলাম, কিছুই বলতে দেওয়া হচ্ছিল না। সেই অবস্থার প্রতিবাদ হিসেবে আমি কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছিলাম।”

এছাড়া, মমতা সংসদে চেয়ার-টেবিল ভাঙার অভিযোগ নিয়েও বিরোধীদের কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “বিরোধীরা বলছে আমি চেয়ার-টেবিল ছিঁড়েছি। আমি স্পিকারকে বলব, আমাকে প্রমাণ দিতে হবে। সিঙ্গুরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি আমাকে। সিঙ্গুর থেকে ফিরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। পুলিশ আমাকে আটকাল। তখন আমি বলেছিলাম, বিরোধী দলনেতাকে খবর দিন, তারপরেও আমাকে মারধর করা হয়।” তিনি দাবি করেন, তখন বিরোধী দল তাকে নিয়ে ভেতরে নিয়ে গিয়েছিল এবং তিনি সমস্ত ঘটনা তাদের সামনে খুলে বলেছিলেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য রাজনীতির নানা দিকে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। তার মতো একজন রাজনীতিবিদের কথা, একসময়ের বিরোধী নেতা হিসেবে সংসদে তার অভিজ্ঞতা, এমনকি কাগজ ছিঁড়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি, এগুলি সব মিলিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর। মমতার সেসব দিনের স্মৃতি যেন আজও তার মনে গেঁথে রয়েছে, যার সাক্ষী ছিলেন শুধু তিনি নিজে, কিন্তু সেই অভিজ্ঞতাও প্রভাব ফেলেছিল রাজনীতির গতিপথে।