আবহাওয়ার চোখ রাঙানি, সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাজি ব্যবসায়ীরা

বাংলায় উৎসবের মরশুম। কালীপুজো এবং দীপাবলি আসন্ন, আর এই সময় বাজি ব্যবসায়ীদের (Firecracker Sellers) জন্য সবচেয়ে ব্যস্ত সময়। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। আবহাওয়া পূর্বাভাস…

Diwali firecrackers

বাংলায় উৎসবের মরশুম। কালীপুজো এবং দীপাবলি আসন্ন, আর এই সময় বাজি ব্যবসায়ীদের (Firecracker Sellers) জন্য সবচেয়ে ব্যস্ত সময়। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, দানা-র প্রভাব পড়েছে বঙ্গে, ভারী বৃষ্টিরও আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় বাজি ব্যবসায়ীরা চিন্তিত, কারণ এই ভারী বর্ষণ তাদের ব্যবসায় বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

এতদিন ধরে ব্যবসায়ীরা যা পরিকল্পনা করেছেন, এখন তা প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উৎসবের সময় বাজির চাহিদা সাধারণত তুঙ্গে থাকে। মানুষ আনন্দের জন্য বাজি কেনে, কিন্তু যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে সেই উৎসবের আনন্দ কেমন হয়? বাজি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, “আমরা এই সময়ে বিক্রি করি বেশি পরিমাণে, কিন্তু যদি মানুষ বাড়ির বাইরে বের না হন, তাহলে আমাদের বিক্রি কীভাবে হবে?

   

বৃষ্টি ব্যবসায়ীদের জন্য শুধু এক চ্যালেঞ্জই নয়, বরং একটি আর্থিক বিপদের কারণ হতে পারে। তারা জানান, সাধারণত উৎসবের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে বাজি প্রস্তুত করে রাখেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বাজিগুলি যদি ভিজে যায়, তবে তা বিক্রির অযোগ্য হয়ে পড়বে। এই উদ্বেগ তাদের মধ্যে যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, “যদি এবারও গত বছরের মতো হয়, তাহলে আমাদের বিপদ হবে। আমরা প্রস্তুত হচ্ছি, কিন্তু আবহাওয়া আমাদের হাতে নেই।”

সাধারণত, বাজি বিক্রি করার সময় বিভিন্ন রকমের অফার দেওয়া হয়। কিন্তু এবারের পরিস্থিতিতে, অনেক ব্যবসায়ী ভাবছেন, কীভাবে তাদের ব্যবসা রক্ষা করা যায়। একজন ব্যবসায়ী জানান, তাঁরা চেষ্টা করছেন, যাতে ক্রেতারা তাদের বাজি কিনতে আসেন। তাঁরা বিশেষ অফার দিতে প্রস্তুত। তবে আবহাওয়ার জন্য তাদের ব্যবসা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।”

আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এই কারণে বাজি ব্যবসায়ীদের নতুন পরিকল্পনা তৈরির প্রয়োজন পড়ছে। অনেক ব্যবসায়ী বলেন, তাঁরা আশা করছেন, বৃষ্টি কম হবে। তবে যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে বিক্রির পরিমাণের উপর তার প্রভাব পড়বে।

দক্ষিণ বঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলের বাজি ব্যবসায়ীরা পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছেন। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন, কীভাবে আবহাওয়ার কারণে ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায়। কিছু ব্যবসায়ী বাড়তি নিরাপত্তার জন্য স্টকিং এবং পরিবহন পদ্ধতি বদলানোর চিন্তাভাবনা করছেন। তারা জানাচ্ছেন, “আমরা যদি একত্রিত হয়ে কাজ করি, তাহলে হয়তো কিছুটা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব।”

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনও বাজি ব্যবসায়ীদের সাহায্য করতে প্রস্তুত। তারা বিভিন্ন জনসাধারণকে সচেতন করতে উদ্যোগ নিয়েছে যাতে তারা নিরাপদে বাজি কিনতে পারেন। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রশাসনের সহায়তা তাদের কাজের পরিসর বাড়াতে পারে।

বৃষ্টির কারণে উদ্বেগের মধ্যে, বাজি ব্যবসায়ীরা নিজেদের কাজের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা জানেন, উৎসবের সময় মানুষের মধ্যে আনন্দের পরিবেশ তৈরি করা তাদের দায়িত্ব। আবহাওয়ার চোখ রাঙানি যেন তাদের উদ্যমকে কমাতে না পারে, এই কামনাই করছেন তারা। বাজি ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস, সংকটের মধ্যেও তারা নিজেদের কাজের মাধ্যমে মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। সুতরাং, সিঁদুরে মেঘের মধ্যে আশা নিয়ে তারা সামনের দিকে এগিয়ে চলছেন, নিজেদের শ্রম এবং প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে।