War Preparedness বিশ্ব পরিস্থিতি দিন দিন উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে, এবং যুদ্ধের সম্ভাবনা বা সংকটের কথা আমাদের কল্পনায় আসা অস্বাভাবিক নয়। যদিও ভারত একটি শান্তিপ্রিয় দেশ, তবু যদি কখনও যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে মহানগর কলকাতার মত ঘনবসতিপূর্ণ শহরে কীভাবে নাগরিকরা নিরাপদে থাকতে পারেন, তা নিয়ে আগাম পরিকল্পনা থাকা অত্যন্ত জরুরি।
১. গভীর ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনগুলো আশ্রয়ের উপযুক্ত স্থান
কলকাতার মেট্রো রেলপথ অনেকাংশেই ভূগর্ভস্থ, বিশেষ করে চাঁদনি চক, এসপ্ল্যানেড, মহাকরণ, ওয়েলিংটন, পার্কস্ট্রিটের মতো স্টেশনগুলো। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যদি বায়বীয় হামলার আশঙ্কা থাকে, তবে এই ভূগর্ভস্থ স্টেশনগুলো অস্থায়ী বাংকার হিসেবে ব্যবহারযোগ্য হতে পারে। তবে এর জন্য সরকারকে এগুলি যথাযথভাবে প্রস্তুত করে রাখতে হবে — যেমন পর্যাপ্ত খাদ্য, পানীয় জল, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা এবং জরুরি চিকিৎসা।
২. সরকারি ভবন ও স্কুল-কলেজগুলোর ভূগর্ভস্থ আশ্রয়স্থল নির্মাণের পরিকল্পনা
অনেক স্কুল-কলেজ এবং সরকারি ভবনে পর্যাপ্ত জায়গা থাকে যেখানে অস্থায়ী বা স্থায়ী বাংকার নির্মাণ করা যেতে পারে। যেমন, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, আলিপুর কোর্ট চত্বর — এসব জায়গায় বড় ভবনের নিচে সুরক্ষিত স্থান তৈরি করা সম্ভব। এই পরিকল্পনাগুলি আগেভাগেই প্রস্তুত রাখা জরুরি।
৩. পুরনো কেল্লা বা দুর্গজাতীয় স্থাপনা ব্যবহার
কলকাতার আশেপাশে কিছু পুরনো কেল্লা বা দারুনভাবে নির্মিত স্থাপত্য আছে, যেমন ফোর্ট উইলিয়াম। যদিও এটি বর্তমানে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, তবে প্রয়োজনে এটি সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য কিছু অংশ উন্মুক্ত করা যেতে পারে। এসব স্থাপনা অনেকাংশে যুদ্ধ-প্রতিরোধী এবং পুরু দেয়ালবিশিষ্ট হওয়ায় সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করতে পারে।
৪. পাড়া ভিত্তিক কমিউনিটি সেন্টার প্রস্তুত রাখা
কলকাতার প্রায় প্রতিটি পাড়ায় একটি করে ক্লাব বা কমিউনিটি সেন্টার আছে — যেমন দুর্গাপূজোর সময় ব্যবহৃত হয়। এসব জায়গাকে যুদ্ধকালীন সময়ের জন্য খাবার মজুত, ওষুধ ও যোগাযোগের ব্যবস্থার কেন্দ্র করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পাড়ার যুব সমাজকে সচেতন ও প্রশিক্ষিত করা প্রয়োজন।
৫. আপাতত ব্যক্তিগত প্রস্তুতি – নিজের বাড়িতে সুরক্ষা পরিকল্পনা
প্রত্যেক পরিবারকে অন্তত একটি ঘরকে “সেফ রুম” হিসেবে প্রস্তুত রাখা উচিত — যেখানে শক্ত দরজা, প্রাথমিক চিকিৎসার সামগ্রী, কিছু শুকনো খাবার, পানীয় জল, টর্চ, পাওয়ার ব্যাঙ্ক ইত্যাদি থাকবে। ইন্টারনেট বা মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকলে রেডিও কাজে লাগতে পারে।
৬. সরকার ও সেনাবাহিনীর নির্দেশ মেনে চলা
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সরকার ও প্রতিরক্ষা বিভাগের নির্দেশ মানা। কোথায় যেতে হবে, কোন রুট বন্ধ, কোথায় আশ্রয় দেওয়া হবে — এসব তথ্য সরকার সময় মতো জানাবে। বিভ্রান্তিকর বা ভুয়ো খবরে কান না দিয়ে, সরকারি মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত।