কুমড়ো থেকে বেগুন—প্রতি কেজিতেই বাড়তি খরচ, বাজারে হাহাকার

টানা বর্ষণের জেরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মাঠে দাঁড়ানো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে বাজারে। সবজির (Vegetable Price) জোগান কমে যাওয়ায় পাইকারি…

Vegetable Price today in kolkata 22 august 2025

টানা বর্ষণের জেরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মাঠে দাঁড়ানো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর প্রভাব সরাসরি এসে পড়েছে বাজারে। সবজির (Vegetable Price) জোগান কমে যাওয়ায় পাইকারি ও খুচরো দুই বাজারেই দামের গ্রাফ হু হু করে বেড়েছে। ফলে প্রতিদিনের বাজার করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্ত পরিবারের।

এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, শুধুমাত্র সবজি কিনতেই গড়পড়তা একটি পরিবারের প্রতিদিন খরচ হয়ে যাচ্ছে প্রায় এক হাজার টাকা। মাসের শুরুতেই বাজার করতে গিয়ে তাই পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। যাঁদের বেতন সীমিত, তাঁরা বাধ্য হয়ে সবজি কেনা কমাচ্ছেন বা একেবারেই কিছু সবজি কেনা বন্ধ করে দিচ্ছেন।

   

সবজির অগ্নিমূল্য

টমেটোর দাম এক লাফে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা (Vegetable Price) কেজি হয়েছে। পটল ২০০ টাকা(Vegetable Price) ছুঁয়েছে। বেগুন, কুমড়ো, লাউ, করলা—সবজির প্রায় সব ধরনেরই দাম চড়া। পেঁয়াজ ও আলুর মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বাড়তি। ফলে সবজির (Vegetable Price) ঝুড়ি ভরতে গেলেই হাত পোড়াচ্ছে ক্রেতাদের।

এক গৃহিণীর বক্তব্য, “বাজার করতে গেলে এখন আগে হিসেব কষতে হয়। আগে যেখানে ৫০০ টাকায় সপ্তাহের বাজার হয়ে যেত, সেখানে এখন প্রতিদিন ১,০০০ টাকা খরচ হচ্ছে। শুধু সবজির দামের জন্যই সংসারের বাজেট পুরোপুরি ভেঙে পড়ছে।”

কৃষকদেরও ক্ষতি

যদিও বাজারে সবজির(Vegetable Price) দর আকাশছোঁয়া, কৃষকরা বলছেন তাঁরা এর থেকে কোনও লাভ পাচ্ছেন না। উল্টে বৃষ্টির কারণে মাঠে দাঁড়ানো বহু ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে উৎপাদন কমেছে। যারা কিছুটা ফসল বাঁচাতে পেরেছেন, তাঁরা পরিবহণে সমস্যার কারণে সঠিক দাম পাচ্ছেন না। পাইকারি থেকে খুচরো বাজারে পৌঁছতে পৌঁছতেই দামের বহুগুণ বৃদ্ধি হচ্ছে, যার চাপ পড়ছে ক্রেতাদের ওপর।

এক কৃষক জানালেন, “আমরা বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে যে দাম পাচ্ছি, তা দিয়ে খরচও উঠছে না। অথচ শহরে গিয়ে দেখি সেই সবজি অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনই ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষও।”

Advertisements

সরকারের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে

সবজির দরের(Vegetable Price) লাগাম টানার জন্য রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই টাস্ক ফোর্সকে কার্যকরী ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। কবে তারা সক্রিয় হবে, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রেতা ও কৃষকদের মধ্যে।

মধ্যবিত্তরা বলছেন, শুধুমাত্র আশ্বাসে কোনও কাজ হচ্ছে না। বাজারে দামের লাগাম টানার জন্য কড়া পদক্ষেপ প্রয়োজন। সরকার যদি সত্যিই টাস্ক ফোর্স সক্রিয় করে, তাহলে পাইকারি ও খুচরো বাজারে নজরদারি বাড়ানো দরকার। নাহলে দামের এই অগ্নিমূল্য অব্যাহত থাকবে।

ক্রেতার হতাশা

ক্রেতাদের মতে, সবজির দর (Vegetable Price) কমার বদলে প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে উঠছে। যাঁরা নির্দিষ্ট বেতনের উপর নির্ভর করেন, তাঁদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বাজার করতে গেলে এখন সংসারের অন্যান্য খরচ কেটে ফেলতে হচ্ছে।

একজন বেসরকারি কর্মচারী বলেন, “মাসে ২০ হাজার টাকার বেতনে সংসার চালানোই কঠিন। তার মধ্যে প্রতিদিন শুধু সবজির জন্য হাজার টাকা খরচ করলে আর কিছুই বাকি থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে তো না খেয়ে মরতে হবে।”