নিউজ ডেস্ক: অহমিয়া-বাঙালি জাতি বিদ্বেষ দ্রুত ছড়াচ্ছে অসমে (Assam)। বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যকাকে অসম থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক তথা প্রাক্তন সাংসদ নগেন শইকিয়া। তাঁর মন্তব্য ধরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিল সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আলফা (স্বাধীনতা) (ULFA-I)
আলফা (স্বাধীনতা) সুপ্রিমো পরেশ বড়ুয়া সংবাদমাধ্যম পাঠানো বিবৃতিতে জানান ,ডক্টর ডক্টর শইকিয়ার মতো একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বরাক উপত্যকা নিয়ে সস্তা মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। তাঁর কাছে এমনটা আশা করতে পারিনি। এ ধরণের অদ্ভুত মন্তব্য তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
মোস্ট ওয়ান্টেড বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা পরেশ বড়ুয়া বলেন, বরাক উপত্যকা অহমিয়া চলবেই। সেখানে বাংলা সহযোগী ভাষা৷ কাছাড়কে আমরা বাংলাভাষীর হতে তুলে দিতে পারিনা। সেখানে মণিপুরীরা রাজত্ব করবেন।
আলফা (স্বাধীনতা) প্রধান জানান, ডক্টর শইকিয়া বলেছেন, মায়ের মাথা ব্যাথা যদি হয় ,তাহলে সুযোগ্য সন্তান হিসেবে গলা কেটে দেওয়া উচিৎ। যেটা আমরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারিনা। একজন বিদ্যান ব্যক্তি হিসেবে এ ধরণের কথা বলাটা যে ঠিক হয়নি, সেটা একজন অশিক্ষিত মানুষও বলবে। তাঁর এই মতামতের আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি।
আলফা প্রধানের ঠান্ডা হুমকির পরেই অসমের রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তবে ডক্টর শইকিয়া জানান, আমার বক্তব্যকে বিকৃত আকারে তুলে ধরা হয়েছে। নিজের অবস্থানে তিনি অটল বলে ফের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অসমের ভাষা সংস্কৃতিকে বরাকের একাংশ মানুষ অপমান করার ঘটনা আর নতুন হয়ে থাকেনি। দীর্ঘকাল ধরেই চলে আসছে। এমনকি অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে অসমের কোনও সাহিত্যিক ,শিল্পীর ছবি নেই।
ডক্টর শইকিয়ার মন্তব্য নিয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় রাজনৈতিক হাওয়া গরম হয়েছে। সারা অসম ছাত্র সংস্থা (AASU) প্রতিবাদে সামরিক। আসুর উপদেষ্টা ডক্টর সমুজ্জল কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অসমের অখণ্ডতা যেকোনো ভাবেই রক্ষা থাকুক। এর বিভক্ত হোক সেটা আমার চাই না। যে কোনও পরিবেশে অসমের বিভাজনের পক্ষে আমরা নেই বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি।
অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদের নেতা পলাশ সাংমা বলেন, রাজ্যে অখণ্ডতা বজায় থাকাটাই আমাদের কাম্য। অসমের জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় বঙ্গভাষী অসমীয়াদের অংশীদার হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অসম থেকে আরও একটি পৃথক রাজ্য সৃষ্টি হওয়াটা আমরা চাই না।
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ডক্টর নগেন শইকিয়া ক্ষোভ ও আবেগের বশবর্তী হয়েই বির্তকিত মন্তব্য করছেন বলে জানান অসম সাহিত্য সভার সভাপতি কুলধর শইকিয়া। তিনি বলেন ,অসমের ভাষা ও সাহিত্য এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রতিজন মানুষের অবদান রয়েছে।
সোনাইয়ের বিধায়ক করিমুদ্দিন বড়ভূঁঞা নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন ,বরাকের মানুষ কোনওদিনই অসম থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায় না।