হাওড়ায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে বিধায়কের গাড়ি, মৃত দুই, তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

শনিবার রাত ১টা নাগাদ হাওড়ার (Howrah Accident) শিবপুরে ফরসোর রোডে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন, এবং আরও তিনজন বর্তমানে মৃত্যুর…

Howrah Accident

শনিবার রাত ১টা নাগাদ হাওড়ার (Howrah Accident) শিবপুরে ফরসোর রোডে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন, এবং আরও তিনজন বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন হাসপাতালে(Howrah Accident)। দুর্ঘটনার শিকার গাড়িটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লার। তবে বিধায়ক নিজে সেই সময় গাড়িতে ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। গাড়িতে ছিলেন পাঁচজন যাত্রী।

ঘটনার বর্ণনা অনুযায়ী, গাড়িটি (Howrah Accident) তীব্র গতিতে চলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা একটি ট্রেলারে সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কার তীব্রতায় গাড়িটির সামনের অংশ ট্রেলারের পিছনে আটকে যায়। মূল অংশ একেবারে ছিটকে পড়ে সামনের দিকে। তীব্র সংঘর্ষে গাড়িটি (Howrah Accident) এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে এক মুহূর্তে সেটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ভয়াবহ আওয়াজে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং দ্রুত পুলিশে খবর দেন।

   

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছিল। চালক গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে ট্রেলারে। শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা দৌড়ে এসে দেখতে পান, গাড়িটি পুরোপুরি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে শিবপুর থানার পুলিশ।

পুলিশ পাঁচজনকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের নাম এখনও সুনিশ্চিত নয়। বাকি তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে এবং তাদের চিকিৎসা চলছে।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির চালক ছিলেন মহম্মদ মোস্তাক খান (২৫)। তিনি কলকাতার ওয়াটগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, মোস্তাক তার আত্মীয়দের নিয়ে বাঁকড়া গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথেই ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তার সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন আরও চারজন।

দুর্ঘটনার পর প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে গাড়িটির গতি অত্যন্ত বেশি ছিল। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ট্রেলারের পেছনে ধাক্কা লাগে। পুলিশের মতে, চালক যদি সাবধানে এবং ধীরে গাড়ি চালাতেন, তবে হয়তো এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।

গিয়াসউদ্দিন মোল্লার গাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটলেও তিনি নিজে তখন গাড়িতে ছিলেন না। ঘটনাটি শুনে তিনি গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, “এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হবে।”

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মূলত অতিরিক্ত গতি এবং নিয়ন্ত্রণহীনতা উঠে আসছে। ট্রেলারের মতো ভারী যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষে ছোট গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি সর্বদা বেশি হয়। রাতের বেলায় সড়কে গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ বারবার দেওয়া হলেও চালকরা তা অমান্য করেন। এই দুর্ঘটনাও তারই এক দৃষ্টান্ত।

পুলিশ জানিয়েছে যে গাড়িটির গতিবেগ এত বেশি ছিল যে ধাক্কার অভিঘাত সামলানোর কোনো সুযোগ ছিল না। গাড়ি চালকদের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন। এই দুর্ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। পুলিশ দুর্ঘটনাস্থল থেকে গাড়িটির অবশিষ্টাংশ জব্দ করেছে এবং ট্রেলারের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনার সময় গাড়ির গতিবেগ এবং চালকের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে।

আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসার খরচ বিধায়কের পক্ষ থেকে বহন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে সড়কে গাড়ি চালানোর সময় সতর্ক থাকা কতটা জরুরি। অতিরিক্ত গতি বা অবহেলা যে কতটা প্রাণঘাতী হতে পারে, এই দুর্ঘটনা তার উদাহরণ। স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় শোকপ্রকাশের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।