কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘একুশে জুলাই শহিদ সমাবেশ’- (TMC Rally) এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল আনুষ্ঠানিকভাবে। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির তত্ত্বাবধানে সোমবার খুঁটিপুজোর মধ্য দিয়ে শুরু হল মঞ্চ নির্মাণের কাজ। প্রতি বছর যেমন সিঁড়ি ব্যবহার করা হত, এবার তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সিঁড়ির পরিবর্তে মঞ্চে ওঠার জন্য থাকছে র্যাম্প।
এছাড়াও, মঞ্চের নকশায় এসেছে বড়সড় পরিবর্তন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণত মঞ্চের সামনের দিকে এগিয়ে এসে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন ও বক্তব্য রাখেন। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই এবার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর দিকেও মঞ্চের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। যাতে আরও বেশি মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাছ থেকে দেখতে ও শুনতে পান।
এবার একাধিক মঞ্চ তৈরি হচ্ছে —
প্রধান মঞ্চ: ৫২ ফুট বাই ২৪ ফুট, যেখানে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা।
দ্বিতীয় মঞ্চ: ৪৮ ফুট বাই ২৪ ফুট
তৃতীয় মঞ্চ: ৪০ ফুট বাই ২৪ ফুট
এই তিনটি মঞ্চের উচ্চতা যথাক্রমে ১০, ১১ ও ১২ ফুট। মূল মঞ্চটি সবচেয়ে উঁচু।
তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতি বছরের মতো এবারও শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিশাল LED স্ক্রিন বসানো হবে। যাতে যাঁরা মূল মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন না, তাঁরাও সমাবেশ সরাসরি দেখতে পারেন।
নিরাপত্তার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। মঞ্চ ও আশেপাশের এলাকায় থাকছে CCTV নজরদারি। পুলিশ ও দলের স্বেচ্ছাসেবকরা সমাবেশে নজরদারি চালাবে। কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট ও পার্কিং সংক্রান্ত বিশেষ পরিকল্পনা করেছে। কারণ প্রতি বছর একুশে জুলাইয়ের দিন শহরে কয়েক লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরে আগমন শুরু হবে ১৮ জুলাই থেকে। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম— রাজ্যের প্রতিটি দিক থেকে কর্মী-সমর্থকরা কলকাতায় এসে পৌঁছাবেন। তাঁদের জন্য আগেভাগেই বুক করা হয়েছে একাধিক জায়গা—
সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক
নিউ টাউনের ইকোপার্ক সংলগ্ন এলাকা
দক্ষিণ কলকাতার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, উত্তীর্ণ ও নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম
বড়বাজারের ধর্মশালা ও ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র
খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করছে দল।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, এবারের একুশের সমাবেশ আগের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে। কারণ লোকসভা ও একাধিক বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপুল জয়ের পর দলীয় মনোবল তুঙ্গে। এই সমাবেশ থেকেই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক বার্তা দেবেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, “এই দিনটি আমাদের কাছে আবেগ, লড়াই এবং শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের দিন। ১৯৯৩ সাল থেকে আমরা নিয়ম করে শহিদদের স্মরণ করে এসেছি। এবারও তেমনই হবে, আরও বড় করে হবে।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, এবার একুশে জুলাই শুধু স্মরণ নয়, রাজনৈতিক বার্তায় ভরপুর একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।