কলকাতার রাস্তায় আজ আবারও নামছে একাধিক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশ তাদের সরকারি এক্স (X) হ্যান্ডল-এর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে, শুক্রবার মোট পাঁচটি বড় মিছিল শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি মিছিলের রুট আগেভাগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ বিকল্প পথ বেছে নিতে পারেন এবং অপ্রয়োজনীয় ভোগান্তিতে না পড়েন।
প্রথম মিছিল
প্রথম মিছিলটি এজ়রা স্ট্রিট থেকে শুরু হয়ে ইন্ডিয়া এক্সচেঞ্জ প্লেস ও ব্রেবোর্ন রোড হয়ে ক্যানিং স্ট্রিটের দিকে যাবে। এই রুটে সাধারণত অফিস ফেরত মানুষের চাপ অনেকটাই বেশি থাকে। তাই দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত ওই এলাকায় যানজটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
দ্বিতীয় মিছিল
দ্বিতীয় মিছিলটি রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শুরু হবে। এরপর রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে মিছিল এগোবে। ডোরিনা ক্রসিং ও কেসি দাস ক্রসিং অতিক্রম করার পর শেষ পর্যন্ত মিছিল পৌঁছবে এসপ্ল্যানেডের ওয়াই চ্যানেলে। এই গোটা পথটি কলকাতার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা। অফিসপাড়া থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই পথ ব্যবহার করেন। ফলে দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে এখানে যানজট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
তৃতীয় মিছিল
কলকাতা পুলিশের বার্তায় আরও বলা হয়েছে, দুপুর দু’টো পর এজেসি বসু রোড এবং বেক বাগান চত্বরে তৃতীয় মিছিলের কারণে যান চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে। এই অংশ দিয়ে একদিকে যেমন বাইপাসের সঙ্গে শহরের যোগ রয়েছে, অন্যদিকে পার্ক সার্কাস, মউলালি, সেন্ট্রাল এভিনিউ হয়ে উত্তর-দক্ষিণমুখী বিপুল যানবাহন চলাচল করে। ফলে এখানেও যানজট হতে পারে।
চতুর্থ মিছিল
রবীন্দ্র সরণি ও বিদ্যাপতি সেতু হয়ে আরও একটি মিছিল আজ শহরে নামতে চলেছে। এই অংশে সাধারণত বাজার ও পাইকারি ব্যবসার চাপ সবসময়ই থাকে। ফলে মিছিলের কারণে স্বাভাবিকভাবে সেখানে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হতে পারে।
পঞ্চম মিছিল
ক্যানিং স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকায় আজ শেষ মিছিলটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। যেহেতু ওই এলাকা পুরোপুরি ব্যবসাকেন্দ্রিক, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাস্তা জুড়ে গাড়ির চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেশি থাকে। ফলে গাড়িচালক ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
পুলিশের পরামর্শ
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, মিছিলের সময়সীমা এবং রুট অনুযায়ী ট্রাফিক সামলাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অতিরিক্ত ট্রাফিক গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প রুট ব্যবহার করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে, যারা একান্ত প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে বের হবেন, তারা যেন এজেসি বসু রোড, ডোরিনা ক্রসিং, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, ক্যানিং স্ট্রিট এবং ব্রেবোর্ন রোড এড়িয়ে চলেন।
নাগরিকদের আশঙ্কা ও প্রতিক্রিয়া
শহরের সাধারণ মানুষ অবশ্য এই পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তায় রয়েছেন। প্রতিদিনকার মতো অফিস, স্কুল–কলেজ, হাসপাতালের কাজে বেরোতে গিয়ে কোথায় আটকে পড়তে হবে, তা ভেবেই অনেকেই চিন্তিত। কেউ কেউ বলছেন, কলকাতার মতো ব্যস্ত শহরে একদিনে পাঁচ-পাঁচটি মিছিল আয়োজন করলে স্বাভাবিকভাবেই অসুবিধা বাড়বে। তবে অন্যদিকে, অনেকেই মনে করছেন, গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের দাবি–দাওয়া তুলে ধরার অন্যতম পথ মিছিল। তাই কিছুটা অসুবিধা মেনে নেওয়া ছাড়া গতি নেই।