কলেজে চাকরি বিতর্ক, তৃণমূল ছাত্রনেতাদের নিয়োগে রাজনৈতিক দাপট

কসবা কলেজ গণধর্ষণ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্রের কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ নিয়ে এবার নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, তৃণমূল (TMC) পরিচালিত কলেজ…

কসবা কলেজ গণধর্ষণ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্রের কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ নিয়ে এবার নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, তৃণমূল (TMC) পরিচালিত কলেজ পরিচালন সমিতির সুপারিশে চাকরি পেয়েছিল মনোজিত। এই কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি আবার তৃণমূলের বিধায়ক অশোক দেব।

তবে এই ঘটনা একা কসবা কলেজের নয়। কলকাতার একাধিক সরকারি ও সরকারপোষিত কলেজে গত কয়েক বছরে একই রকম ভাবে প্রাক্তন TMCP (তৃণমূল ছাত্র পরিষদ) নেতা এবং ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মী পদে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

   

কোথায় কোথায় হয়েছে এই ধরনের নিয়োগ?
সূত্রের খবর অনুযায়ী—

আশুতোষ কলেজ: এখানে ছাত্র সংসদের প্রাক্তন এক দাপুটে TMCP নেতা বর্তমানে হেড ক্লার্কের পদে কর্মরত।

সুরেন্দ্রনাথ কলেজ: এখানে অন্তত ৪ জন এমন কর্মী রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন তৃণমূল (TMC) ছাত্র পরিষদের নেতা এবং প্রাক্তন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক।

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজ: প্রাক্তন TMCP সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে নন-টিচিং স্টাফ হিসেবে কাজ করছেন।

গুরুদাস কলেজ: এখানেও ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এখন শিক্ষাকর্মী পদে কর্মরত।

মণীন্দ্র কলেজ: এখানে ৫ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন ছিলেন TMCP পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক।

Advertisements

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ: এখানেও প্রাক্তন TMCP নেতা এখন শিক্ষাকর্মী হিসেবে কর্মরত।

এই সমস্ত নিয়োগের বেশিরভাগই হয়েছে ২০১১ সালের পর, অর্থাৎ রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর।

কেন উঠছে প্রশ্ন?
শিক্ষা মহলের একাংশের মতে, এই ধরণের নিয়োগের ফলে কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ছে। প্রশাসনিক কাজেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠছে। অনেক সময় ছাত্র আন্দোলন দমন কিংবা রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার জন্য এসব কর্মীদের ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

মনোজিতের নিয়োগের পেছনে রাজনৈতিক মদত?
বিশেষত মনোজিত মিশ্রের নাম সামনে আসার পর এই বিতর্ক আরও বড় আকার নিয়েছে। অভিযোগ, কলেজ পরিচালন সমিতির সুপারিশেই তাকে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অভিযোগ ছিল বলে শোনা যাচ্ছে।

শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “কলেজ ক্যাম্পাসের স্বচ্ছতা এবং রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে এই ধরনের নিয়োগের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”

পুলিশি তদন্তের অঙ্গ হয়ে উঠতে পারে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া:
বর্তমানে কসবা গণধর্ষণ মামলার তদন্তে SIT এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করছে বলে সূত্রের খবর। রাজনৈতিক প্রভাব খতিয়ে দেখা হতে পারে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News