শ্রীরামপুর, ৩০ সেপ্টেম্বর: আজ মহাষষ্ঠী। সকাল থেকেই শহর ও গ্রামের মণ্ডপগুলিতে ভক্তদের ঢল। দেবী দুর্গার আরাধনায় ১০৮টি প্রদীপ ও পদ্মফুল দিয়ে শুরু হল মহাষ্টমীর পুজো। দেবীর চরণে অর্ঘ্য নিবেদনের মধ্যে দিয়েই পুষ্পাঞ্জলি দিলেন। এই দিনে পুষ্পাঞ্জলি যেন শুধুই একটি আচার নয়, বরং এক অনাবিল আত্মসমর্পণ। বিশেষ করে মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি ঘিরে আবেগের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সাদা শাড়ি লাল পাড় পরিহিতা মহিলারা, ধুতি-পাঞ্জাবি পরা পুরুষেরা — সকলেই যেন মিলেমিশে এক আত্মিক শক্তির সন্ধান করছেন। শিশুরাও পায়েস আর মিষ্টিমুখে মাতোয়ারা।
সন্ধিপুজো ঘিরে মণ্ডপে মণ্ডপে আরও একবার জমে উঠল আধ্যাত্মিক আবহ। এই সময়টিই মহিষাসুর বধের ক্ষণ — দেবী দুর্গার সেই চরম রূপ, যেখানে তিনি দশ দিক জয় করতে অস্ত্র হাতে অসুর বিনাশে ব্রতী। ঢাকের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি আর ধূপ-ধুনোর গন্ধে মণ্ডপ হয়ে উঠল এক পরম পবিত্র স্থান।
এই শুভ লগ্নেই রাজনীতির ময়দান থেকে উঠে এসে মণ্ডপে পা রাখলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মায়ের কাছে তাঁর আবেগঘন প্রার্থনা বহু মানুষের চোখে জল এনে দিল। দেবীর সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন,”মা, তোমার কাছে প্রার্থনা — দিদিকে আরও শক্তি দাও, যেন বাংলার বুকে যারা রাজনীতির নামে বিভেদ সৃষ্টি করছে, তাদের রুখে দিতে পারেন। বাংলার আকাশে শান্তি ফিরিয়ে আনো, মা।”
সন্ধিপুজো শেষে অনেকেই ঠাকুর দেখার পাশাপাশি মন দিয়ে আরতিতে অংশ নেন। কেউ কেউ অঞ্জলি দেন রাজ্যের মঙ্গল কামনায়। আবার কেউ কেউ প্রার্থনা করেন পারিবারিক শান্তির জন্য। শহর থেকে মফস্বল, গ্রাম থেকে শহরতলি — মহাষ্টমীর দিনে দেবীর কাছে সকলের চাওয়াই এক, আজকের দিন তাই শুধু পুজো নয়, নিজের ভিতরের ‘অসুর’-কে দমন করার প্রতিজ্ঞাও বটে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে জল হোক বা ভক্তদের নীরব প্রার্থনা — মহাষ্টমী জানিয়ে দিল, বাংলার মননে এখনো দেবীর জায়গা অটুট।