‘এপিক বিতর্কে’ নয়া মোড়, কমিশনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের বড় তথ্য ফাঁস

রাজ্যে ভুয়ো ভোটারের বিষয়টি এখন তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। গত সপ্তাহ থেকে বাংলায় এই ইস্যুতে রাজনীতি সরগরম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে একের…

Election Commission Announces Bye-Election Schedule for Four States

রাজ্যে ভুয়ো ভোটারের বিষয়টি এখন তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। গত সপ্তাহ থেকে বাংলায় এই ইস্যুতে রাজনীতি সরগরম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে জানিয়েছে, একই এপিক নম্বরে দুটি রাজ্যে ভোটারের নাম থাকার বিষয়টি সন্দেহজনক।

Advertisements

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যু নিয়ে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের মহাসমাবেশ থেকে একাধিক তথ্য তুলে ধরেন এবং বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ, এমন ভুয়ো ভোটারদের উপস্থিতি রাজ্যের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, এই বিতর্কের মাঝে নির্বাচন কমিশন একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, একই এপিক নম্বরে দুই রাজ্যে ভোটার থাকা মানেই তা ভুয়ো নয়। কমিশনের যুক্তি, এপিক বা ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করার প্রক্রিয়ায় বিকেন্দ্রীকৃত এবং ম্যানুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যার ফলে অনেক সময় একে অপরের সঙ্গে মেলানো তথ্য তৈরি হতে পারে। তবে কমিশন এও স্বীকার করেছে যে, ভুল তথ্য অবশ্যই সংশোধন করা হবে।

তবে কমিশনের এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়নি তৃণমূল। তাদের দাবি, কমিশনের যুক্তি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সাখেত গোখলে এই প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে কমিশনের দাবি নস্যাৎ করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, যে আলফা-নিউমেরিক নম্বর নিয়ে বিতর্ক চলছে, তা আসলে প্রত্যেক ভোটারের বিধানসভা কেন্দ্র এবং পরিচয়ের ভিত্তিতে তৈরি হয়। অর্থাৎ, একেক বিধানসভা কেন্দ্রে আলাদা আলাদা নম্বর থাকে।

তৃণমূল সাংসদ আরও দাবি করেন, কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী যদি ছবি আলাদা হয়েও থাকে, তবে এক নম্বর থাকা ভোটারের ভোটের ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে। বিশেষ করে, যদি কোনো একজন ভোটার বিরোধী দলের সমর্থক হন এবং ভোট কেন্দ্রের অফিসার তার সম্পর্কে আগে থেকে অবগত থাকেন, তবে তার ভোট বাতিল করার জন্য কমিশনের এপিক নম্বরের ভিত্তিতে তার ছবি ভিন্ন হওয়ার কারণ দেখিয়ে তার ভোট বাতিল করা সহজ হয়ে যাবে।

এদিন, দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকেও এই বিষয়ে আলোচনা করেন তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাগরিকা ঘোষ এবং কীর্তি আজাদ। তারা বলেন, কমিশন যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভুল স্বীকার না করে, তবে তারা আরও নতুন তথ্য প্রকাশ করবেন।

তৃণমূলের এই দাবি এবং অভিযোগের ফলে রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বাংলার ভোটের প্রক্রিয়া নিয়ে এই বিতর্ক এতদিনে রাজধানী দিল্লিতেও পৌঁছে গেছে। রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাটি একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আগামী দিনে এই ইস্যু আরও জটিল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, কমিশনের পক্ষ থেকেও আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল পুনরাবৃত্তি না হয় এবং ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়।