দাগি তালিকায় নয়া বিস্ফোরণ, উঠে এল বিধায়কের বৌমার নাম!

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক নতুন নাম উঠে আসছে। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের ঘনিষ্ঠরা এই কলঙ্কিত…

TMC MLA Nirmal Ghosh Reacts After Daughter-in-Law’s Name Appears in Tainted SSC Candidate List

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক নতুন নাম উঠে আসছে। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের ঘনিষ্ঠরা এই কলঙ্কিত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল আরেকটি পরিচিত নাম— শাসকদলীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষের পরিবারের সদস্য। জানা গেছে, দাগিদের তালিকায় উঠে এসেছে বিধায়ক নির্মল ঘোষের বৌমার নাম। আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

নির্মল ঘোষ উত্তর ২৪ পরগনার এক প্রভাবশালী বিধায়ক হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শাসক দলের সংগঠনে সক্রিয় রয়েছেন। তবে পরিবারের সদস্যের নাম নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে কলঙ্কিত তালিকায় উঠে আসায় তাঁর রাজনৈতিক অস্বস্তি আরও বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা সুযোগ হাতছাড়া করছে না। ইতিমধ্যেই বিরোধী দলগুলির নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি আসলে শাসকদলীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়াতেই সম্ভব হয়েছিল।

   

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নির্মল ঘোষ বলেন, “সত্য সামনে আসবে। আমি চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। যা সত্য, তাই প্রকাশ পাবে। আমি বা আমার পরিবার যদি কোনও অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকি, আইন নিজের মতো ব্যবস্থা নেবে।” তাঁর এই মন্তব্য স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, রাজনৈতিক চাপ সামলাতে তিনি আপাতত দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল নিচ্ছেন।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এখনো পর্যন্ত নাম জড়ালেও নির্মল ঘোষের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও প্রমাণ প্রকাশ পায়নি। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যের নাম জড়ানো নিঃসন্দেহে শাসকদলের ভাবমূর্তিতে ধাক্কা দিচ্ছে। বিশেষত, এসএসসি কেলেঙ্কারি মামলার কারণে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে বিরোধীদের আক্রমণ চলছিল, এই নতুন নাম প্রকাশ্যে আসতেই তা আরও তীব্র হবে।

অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, “এই নিয়োগ দুর্নীতি কোনও ব্যক্তিগত ভুল নয়, এটা সাংগঠনিক দুর্নীতি। যাঁরা রাজ্যে প্রভাবশালী, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছেন। একে একে সব সত্য বেরিয়ে আসছে।”

Advertisements

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুধুমাত্র নাম জড়ানো মানেই দোষী প্রমাণ নয়। তদন্ত সংস্থা যদি কোনও নথি বা প্রমাণ হাজির করতে পারে, তবেই প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে। ততদিন পর্যন্ত এই বিতর্ক শুধুই রাজনৈতিক আক্রমণ-প্রতিআক্রমণের হাতিয়ার হয়ে থাকবে।

এই ঘটনায় রাজ্যের সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। বহু বছর ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, আর প্রভাবশালীদের আত্মীয়-স্বজনেরা বেআইনি ভাবে চাকরিতে ঢুকে পড়েছেন। বৌমার নাম প্রকাশ্যে আসতেই সেই ক্ষোভ আবারও নতুন করে উস্কে উঠেছে।

সব মিলিয়ে, এসএসসি দুর্নীতি মামলার জট ক্রমশ জটিলতর হচ্ছে। একের পর এক প্রভাবশালী নাম উঠে আসছে এই তালিকায়। এবার সেই তালিকায় নির্মল ঘোষের পরিবারের নাম যুক্ত হওয়ায় রাজনৈতিক চাপানউতোর আরও বেড়েছে। যদিও বিধায়কের দাবি, সত্যি একদিন প্রকাশ পাবেই— আর সেই কথাতেই আপাতত ভরসা রাখছেন তিনি এবং তাঁর দল।