যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) শনিবারের ঘটনায় রাজনৈতিক পারদ ক্রমশ চড়ছে। মন্ত্রীর গাড়ির তলায় রক্তাক্ত ছাত্র, শিক্ষামন্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। গত শনিবার ঘটেছিল এক ভয়াবহ সংঘর্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে নৈরাজ্যের ছবি ফুটে ওঠে। ছাত্রদের ক্ষোভে ফেটে পড়া, তৃণমূল এবং বামেরা একে অপরকে আক্রমণ করতে শুরু করে। এরই মধ্যে, মন্ত্রীদের মুখে হুঁশিয়ারি শোনা যায়। ছাত্রদের প্রতি তৃণমূলের নেতারা মন্তব্য করেন, ‘গুন্ডামির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘যাদবপুর দখল করতে ১ মিনিটও লাগবে না।’ এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে, অরূপ আরও বলেন, ‘যারা অধ্যাপকদের গায়ে হাত দেয়, তাঁরা কখনও ছাত্র হতে পারে না। ওরা গুন্ডা।’ তার কথায়, ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তৃণমূল রাস্তায় নামবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে।’
এদিকে, সায়নী ঘোষও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘যারা ২৯৪ আসনে একটিও আসন পায় না, তাদের উচিত নিজের দল দেখতে। তারা বাচ্চাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ফায়দা তুলছে।’ সায়নী আরও বলেন, ‘শান্ত যাদবপুরকে অশান্ত করার চেষ্টা করবেন না। শান্ত বাংলাকে অশান্ত করবেন না। ছাব্বিশে আবার খেলা হবে।’
যাদবপুরের (Jadavpur University) বিধায়ক দেবব্রত মজুমদারও নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘সীমারেখা অতিক্রম করবেন না, নাহলে ভাল হবে না।’ তার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে, অনেকেই মন্তব্য করেন যে এই পরিস্থিতি শুধু ছাত্রদের আক্রমণ নয়, তৃণমূলের সমর্থনেও হতে পারে।
কুণাল ঘোষ এই ঘটনার প্রতি তার প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘এরা কী চায়? এই বামেরা তো ৩৪ বছর ধরে লন্ডভন্ড করেছে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে প্রাণঘাতী হামলা করা হয়েছে।’ কুণালের কথায়, ‘তৃণমূল কোনো প্ররোচনায় পা দেয়নি। তার হুঁশিয়ারি ছিল, এরা পরিকল্পনা করে সবটা করেছে, এদের চিহ্নিত করা হোক। আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা যেন না নেয়।’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘কলেজে নির্বাচন কেন হয় না? রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ কেন?’ সেলিম আরও বলেন, ‘রাজ্যের পরিস্থিতি এমন কেন? গাঁজা খাচ্ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী?’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মন্ত্রীদের মধ্যে হুঁশিয়ারি ও প্রতিবাদ উঠে এসেছে। কেউ বলছেন, ‘বামেদের চিহ্নিত করা উচিত।’ আবার কেউ বলছেন, ‘এটা কি গণতন্ত্র?’ ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা আর প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে, যা আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে। এই ঘটনায় যাদবপুরের নৈরাজ্য শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের পরিস্থিতি নয়, রাজ্য রাজনীতির এক বড় প্রশ্ন চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।