তিলোত্তমার বাবা-মার বক্তব্যে অসংগতি, কুণাল ঘোষের মন্তব্যে নতুন বিতর্ক

তিলোত্তমা সরকারের নৃশংস খুনের পর তার বাবা-মা যে বিপর্যস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন, তার মধ্যে এবার নতুন করে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ তাদেরকে নিশানা করেছেন।…

TMC Leader Kunal Ghosh Attacks Tilottama's Parents Over Controversial Statements

তিলোত্তমা সরকারের নৃশংস খুনের পর তার বাবা-মা যে বিপর্যস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন, তার মধ্যে এবার নতুন করে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ তাদেরকে নিশানা করেছেন। কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছেন, তিলোত্তমার বাবা-মা চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন এবং তারা কিছু গোপন করছেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

তিলোত্তমা হত্যার পর শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রেক্ষাপটে, তিলোত্তমার বাবা কয়েক দিন আগে মন্তব্য করেছিলেন যে, এত দ্রুত রায়ের কপি পড়ার সুযোগ না পেয়ে মামলায় যাবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেছিলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছিলেন খেলা হবে, এটাই তার খেলা।” তিলোত্তমার বাবা-মার এমন মন্তব্যের পর কুণাল ঘোষ তাদের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন।

   

কুণাল ঘোষ বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, তিলোত্তমার বাবা-মা মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করছেন। তাদের প্রতি সহমর্মিতা রয়েছে, কিন্তু তারা চক্রান্তকারীদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে নিজেদের অবস্থান বদলাচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “এখন তারা চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন।” কুণাল ঘোষ বলেন, “মেয়ের মৃত্যুর পর তাদের স্নায়ু স্থির রাখা, একেকদিন একেক রকম বক্তব্য দেওয়া — এসব কি সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য?”

তিলোত্তমার বাবা-মা সবসময় নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। কখনও তারা সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন, আবার কখনো বলেছেন সিবিআই তদন্ত তারা চান না। কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “এটা খুবই বিস্ময়কর যে, একজন মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ আমরা কোথাও শুনতে পাইনি। তারা এতটাই ঠাণ্ডা মেজাজে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন, এটা কি সাধারণ আচরণ?”

তবে, কুণাল ঘোষ তিলোত্তমার বাবা-মাকে বিশেষভাবে সতর্ক করে বলেন, “আপনারা যদি চক্রান্তকারীদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে যান, তাহলে আপনাদের মেয়ে হত্যার মামলার সঠিক বিচার হবে না। তারা আপনাদেরকে ব্যবহার করছে। তারা নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতে আপনাদের হাতের পুতুল বানিয়ে রেখেছে।” কুণাল ঘোষ তাদেরকে অনুরোধ করে বলেন, “দয়া করে এই ফাঁদে পা দেবেন না।”

এখানে কুণাল ঘোষ তিলোত্তমার বাবা-মাকে এক ধরনের আত্মসমালোচনার মধ্যে রেখেছেন। তার বক্তব্য স্পষ্ট, যারা চক্রান্তকারীদের সঙ্গে আছেন, তাদের সম্পর্কে আর কোনো ভুল ধারণা রাখলে তা বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে, কুণাল ঘোষ তিলোত্তমার বাবা-মার প্রতি সহানুভূতির বার্তা রেখেছেন, কিন্তু তিনি চান তারা যেন নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে, চক্রান্তকারীদের প্রভাবে না পড়েন।

এছাড়া, তিলোত্তমার বাবা-মাকে কুণাল ঘোষ মনে করেন, “প্রতিদিন একেকরকম মন্তব্য করে নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানো ঠিক নয়। তাদের উচিত চক্রান্তকারীদের হাতের পুতুল হয়ে না থাকা।”