দুদিন নিখোঁজের পর বাড়ির চিলেকোঠা থেকে উদ্ধার উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের দেহ

গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক তৃণমূল নেতার ওপর হামলার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কোথাও তৃণমূল নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি করা হচ্ছে, তো কোথাও আবার তৃণমূল…

Stir over a two-and-a-half-page suicide note of the TMC Councillor Mystery Death

গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক তৃণমূল নেতার ওপর হামলার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কোথাও তৃণমূল নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি করা হচ্ছে, তো কোথাও আবার তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন করার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান (TMC Councillor Mystery Death) সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার তিনি নিখোঁজ ছিলেন। শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে এসে আবারও বাইরে চলে যান তিনি। এর মধ্যে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোনো কথাবার্তা বলেননি উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি সেদিন তাঁর মোবাইল ফোন বাড়িতে রেখে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।

   

গুরুতর অসুস্থ অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর ভাই রামামূর্তি

পরে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে এসে শনিবার সকালে তাঁর বাড়ির চিলেকোঠার ঘর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। জানা গেছে, চিলেকোঠার ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছিল সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ঘটনার পর নোয়াপাড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর দেহ পাঠানো হয়।

পুলিশ এই ঘটনার পেছনে আত্মহত্যা, খুন, অথবা অন্য কোনো কারণের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে। তদন্তকারীরা জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু একদিকে যেমন ব্যক্তিগত শোক তেমনি এটা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

সিআইডি রাশিয়ান রাসায়নিক স্প্রে করেছে, সেই সন্দেহে চিকিৎসকের কাছে অর্জুন

তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব এবং তাঁর পরিবারসূত্রে জানা গেছে, সত্যজিৎ কিছুদিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন। তবে তাঁর মৃত্যুর সাথে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন রকমের জল্পনা শুরু হয়েছে। বিশেষত গত কয়েকদিনে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা যেভাবে তীব্র হয়েছে এর মধ্যে সত্যজিতের মৃত্যু ঘটেছে।

একদিকে সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রহস্যমৃত্যু, অন্যদিকে ১৩ নভেম্বর ভাটপাড়া এলাকায় তৃণমূল নেতা অশোক সাউ খুনের ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই একাধিক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে। অশোক সাউ খুনের পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা দায়ী বলে পুলিশ ধারণা করছে। পুলিশ জানিয়েছে, অশোক সাউ খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত কাইসার আলি ওরফে মোহন নামে একজন দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয় এবং তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

মটন পার্টিতে পাতে পড়ল শুধুই ঝোল, মাংস না পেয়ে লাথি- ঘুষি বিজেপি দফতরে

এদিকে ১৫ নভেম্বর কলকাতার কসবায় ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করা হয়। ওই ঘটনাতেও আততায়ী এক ট্যাক্সিচালকসহ গ্রেফতার হয়েছে। ৯ মিলিমিটার পিস্তল দিয়ে গুলি করার চেষ্টা করা হয়, তবে গুলি আটকে যাওয়ায় আততায়ীকে হাতেনাতে ধরা সম্ভব হয়েছে। এই ঘটনা রাজ্যের রাজনীতিতে আরও একবার উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

তবে বর্তমানে সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত চলছে। পুলিশের মতে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যাবে। তবে একটি সুইসাইট নোট পাওয়া গেছে। সেটা দেখেই এখন তদন্তে এগোচ্ছে পুলিশ। কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে এই দুটি ঘটনা একসাথে ঘটায় রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে।

TMC: কসবায় তৃণমূল কাউন্সিলরের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় চাঞ্চল্য

বিশেষ করে তৃণমূল শিবিরে মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উঠেছে এবং দলের স্থানীয় নেতৃত্ব এই বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন। রাজ্যে এখন রাজনীতির আঁচে উত্তেজনা বাড়ছে এবং পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে, যাতে তদন্ত দ্রুত এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।