তিলোত্তমার জন্মদিনে মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে ফের আন্দোলনের পথে নামবেন বাবা-মা

৯ ফেব্রুয়ারি, তিলোত্তমার জন্মদিন। তবে এ বছর তিলোত্তমার বাবা-মা মনের মাঝে এক গভীর শূন্যতা নিয়ে পালন করবেন এই দিনটি। গত বছরের ৯ অগস্ট তিলোত্তমাকে নৃশংসভাবে…

Tilottama's Parents Urge People to Come Out in Support on February 9

৯ ফেব্রুয়ারি, তিলোত্তমার জন্মদিন। তবে এ বছর তিলোত্তমার বাবা-মা মনের মাঝে এক গভীর শূন্যতা নিয়ে পালন করবেন এই দিনটি। গত বছরের ৯ অগস্ট তিলোত্তমাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল। ঠিক ছয় মাস পর, তার জন্মদিনে, তিলোত্তমার বাবা-মা নতুন করে বড় আন্দোলনের ডাক দিলেন। তাঁদের দাবি, শুধু সঞ্জয় রায় নয়, তিলোত্তমার খুনের সঙ্গে আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত, এবং তাদেরও বিচার করা উচিত।

২০২৩ সালের ৯ অগস্ট, কলকাতার আরজি করের সেমিনার হল থেকে তিলোত্তমার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তিলোত্তমার হত্যার পর পুলিশ দ্রুত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে, যিনি পরবর্তীতে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে শিয়ালদহ আদালত থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড পেয়েছেন। তবে তিলোত্তমার বাবা-মা এই ঘটনায় সন্তুষ্ট নন। তাঁদের অভিযোগ, সঞ্জয় রায়ের পাশাপাশি আরও কয়েকজন ব্যক্তি এই খুনে জড়িত। তাদেরও শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। তিলোত্তমার বাবা-মা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, যতদিন পর্যন্ত না সব দোষী ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হবে, ততদিন তাঁদের আন্দোলন চলতে থাকবে।

   

এদিকে, ৯ ফেব্রুয়ারি তিলোত্তমার জন্মদিনের আগেই এক মর্মস্পর্শী বার্তা দিয়েছেন তার মা। তিনি বলেন, “আজ ৬ মাস হয়ে গেল, তিলোত্তমা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু এখনও তার বিচার পাইনি। এই ৬ মাস ধরে আমাদের সঙ্গে ছিলেন সবাই, আর আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি আমরা রাস্তায় নামব। এই ৬ মাসে আমাদের বৃহত্তর পরিবারকে আমরা আমাদের পাশে পেয়েছি। এখন আরও একবার আমাদের সঙ্গে রাস্তায় নামুন, যাতে আমাদের মেয়ের হত্যার বিচার পাওয়া যায়। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন ছাড়ব না।”

তিলোত্তমার বাবা-মা জানিয়ে দিয়েছেন, এটি শুধু তাঁদের ক্ষোভ বা এককের লড়াই নয়, এটি গোটা সমাজের সঙ্গেও যুক্ত। তাঁদের অভিযোগ, এই ঘটনা শুধু এক ব্যক্তির কাজ নয়, একটি সিস্টেমের কাজ, যা কোনোভাবেই ধরা পড়ছে না। তাঁদের দাবির মধ্যে রয়েছে, সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে আরও কয়েকজনের নাম উঠে আসা এবং তাদেরও বিচারের আওতায় আনা।

তিলোত্তমার বাবা-মার এই আন্দোলন শুধু একটি পারিবারিক ক্ষোভের বিষয় নয়, এটি সমগ্র সমাজের এক বড় প্রশ্ন। আমাদের সমাজ কি সত্যিই নিরাপদ? আমরা কি আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা দিতে পারি? আর কতবার এমন অপ্রতিরোধ্য ঘটনাগুলির শিকার হবে আমাদের সন্তানরা? এই আন্দোলনটি সেই প্রশ্নগুলোকে সামনে আনছে। তিলোত্তমার বাবা-মার লড়াই শুধু তাঁদের মেয়ের জন্যই নয়, এটি প্রতিটি মা-বাবার জন্য, প্রতিটি সন্তানকে নিরাপদ সমাজ দেওয়ার জন্য।

তিলোত্তমার বাবা-মা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, যতদিন না তাঁদের মেয়ের হত্যার সঠিক বিচার হয়, ততদিন তাঁরা থামবেন না। ৯ ফেব্রুয়ারি, তিলোত্তমার জন্মদিনে তাঁদের এই আন্দোলন একটি নতুন মাত্রা পাবে, যখন তারা রাস্তায় নামবেন এবং আরও অনেক সাধারণ মানুষকে তাদের সঙ্গে যোগ দিতে আহ্বান জানাবেন।

এমনকি, তিলোত্তমার মা জানিয়েছেন, “আমাদের একটাই দাবি, তিলোত্তমার হত্যার বিচার চাই, এবং আমাদের লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব।”