ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব (WB Tab Scam) কেনার টাকার দুর্নীতি নিয়ে বর্তমানে শোরগোল রাজ্য-রাজনীতিতে। দিকে দিকে এই কাণ্ডে গ্রেফতার হচ্ছেন একের পর এক স্কুল শিক্ষক থেকে শুরু করে অন্যানো ধৃতরা। এরই মধ্যে কলকাতা পুলিশ ট্যাব-কাণ্ডে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করল। রবিবার শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার হওয়া এই তিন জন সরশুনা থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ধরা পড়েছেন।
ধৃতরা হলেন চোপড়ার বাসিন্দা দিবাকর দাস, গোপাল রায় (দার্জিলিঙ্গের বাসিন্দা), এবং বিশাল ঢালি। এদের মধ্যে রয়েছেন একজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। সরশুনার একটি স্কুলে ৩১ জন ছাত্রী অভিযোগ করেছিল যে, তাদের ট্যাবের টাকা হাতে পৌঁছায়নি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুল থেকেও এমন অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। এই ঘটনার তদন্তে কলকাতা এবং মালদহ পুলিশ একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে।
দূষণে ঢাকা দিল্লির ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ পরিস্থিতি এড়াতে জারি আট দফা বিধিনিষেধ
এদিকে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডিও পৃথকভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। পুলিশ দাবি করছে, ধৃত শিক্ষক এই কাণ্ডের অন্যতম মূলচক্রী। এর ফলে ট্যাব-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১ জন। কলকাতা পুলিশের একটি দল গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ১৬ নভেম্বর কিষাণগঞ্জে পৌঁছায়। এরপর ১৭ নভেম্বর শিলিগুড়ির সেবক রোডে অবস্থিত কসমস শপিং মলের সামনে থেকে এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তাঁদের সোমবার আলিপুর আদালতে হাজির করানোর পাশাপাশি পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন জানানো হবে বলে জানা যাচ্ছে। গত রবিবার ট্যাব-কাণ্ডে আরও পাঁচজনকে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ১০টি মামলা দায়ের করেছে।
সপ্তাহের শুরুতে ডিজেলের দাম বেড়ে দাঁড়াল ৯২.৪২টাকা, কলকাতায় পেট্রোলের দাম কত?
অভিযোগ উঠেছিল, কলকাতার বিভিন্ন এলাকার স্কুলের মোট ১০৭ জন ছাত্রীর ট্যাবের টাকা অন্য কোথাও চলে গিয়েছে। সরশুনা ছাড়াও যাদবপুর, মানিকতলা, ওয়াটগঞ্জ, কসবা, জোড়াবাগান, ভবানীপুর, গল্ফগ্রিন, এবং বেনিয়াপুকুরের স্কুলের ছাত্রীরাও এর শিকার হয়েছেন। কলকাতা পুলিশ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি এই চক্রের তদন্তে আরও বড় ষড়যন্ত্রের হদিস পেয়েছে।
তদন্তকারীদের মতে, বিভিন্ন সাইবার ক্যাফ থেকে স্কুলের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ছাত্রদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তদন্তকারীরা এই চক্রের আরও সদস্যদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। এদিকে, যেসব ছাত্র-ছাত্রী ট্যাবের টাকা পায়নি, তাদের ভবিষ্যতে ট্যাব কেনার ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও এই বিষয়টি নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
রাজ্যে উত্তুরে হওয়ার দাপটের মাঝে জাঁকিয়ে পড়বে শীত, তাপমাত্রা কমে গড়বে রেকর্ড!
ট্যাব-কাণ্ডে এই ফের গ্রেফতারের পর পুলিশ মনে করছে যে অপরাধী চক্রটি বেশ বড় আকার ধারণ করেছে এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত আরও অনেক মানুষ জড়িত থাকতে পারেন। পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে এবং দোষীদের দ্রুত ধরার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে সরশুনার অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ আগেই দাবি করেছিল, এই চক্রের মূল মাথা উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া এলাকায়। এর আগেও পুলিশ চোপড়া থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল। এবার রবিবার সেই তালিকায় আরও তিনজনের নাম যুক্ত হল।