শিক্ষামন্ত্রীর অনুষ্ঠানে তপ্ত যাদবপুর, বামদের প্রতিবাদ

শিক্ষামন্ত্রীর (Bratya Basu) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সফর নিয়ে চলছে চরম উত্তেজনা। ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা বসতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে (OAT)। এই সভায় যোগ দিতে…

Tension in Jadavpur as Leftists Protest at Education Minister's Event

শিক্ষামন্ত্রীর (Bratya Basu) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সফর নিয়ে চলছে চরম উত্তেজনা। ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা বসতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে (OAT)। এই সভায় যোগ দিতে আসছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। খবর ছিল আগেই কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী আসার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অস্থিরতা বাড়তে শুরু করেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা রয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে (Bratya Basu) সামনে পেয়ে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দিতে চাইছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এদিন ব্রাত্য বসুর সামনে স্লোগান উঠতে পারে বলে মনে করছে অনেকে।

   

এখনকার পরিস্থিতি বেশ জটিল। শাসক দলের অধ‍্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সভায় যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক হাজার অধ্যাপক এসেছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপস্থিতি শুধু রাজনৈতিক নেতাদের জন্য নয়, বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর জন্যও একটি বড় সুযোগ। তারা দাবি জানাচ্ছে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন দ্রুত অনুষ্ঠিত হোক।

এসএফআই বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগে ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় রয়েছে। এই জয় ছিল তাদের ঝুলিতে। বর্তমানে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করার দাবিতে ক্যাম্পাসের বাম ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলন করছে। তারা চাইছে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলুন এবং দ্রুত সমস্যা সমাধান করুন।

এদিকে, অতিবাম ছাত্র সংগঠন আরএসএফও তাদের দাবিতে সোচ্চার। সকাল ১১টায় ওএটি-র সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এই কর্মসূচির লক্ষ্য একটাই – ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ব্রাত্য বসুর ছবি সামনে রেখে GET OUT পোস্টারও প্রকাশ করা হয়েছে। এসএফআই নেত্রী কৌশিকী ভট্টাচার্য বলছেন, ‘আমরা কোনও বিশৃঙ্খলা চাইছি না। ইউনিয়ন ইলেকশন নিয়ে আমরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চাই। আমরা চাই উনি যেন পড়ুয়াদের একটু সময় দেন। আমরা উপাচার্যের কাছে আবেদন জানিয়েছি। আমরা চাই অথরিটির পক্ষ থেকেও এই বৈঠকে প্রতিনিধিরা থাকুক।’

ক্যাম্পাসে এই উত্তেজনার মধ্যে শাসক দলের অধ্যাপক সংগঠনের প্রতিনিধি মনোজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘ছাত্রদের কোনও বক্তব্য থাকলে ওরা বিকাশভবনে যেতে পারে।’ অর্থাৎ, তারা মনে করেন, ছাত্রদের সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার উত্তেজনা আরও বেড়ে গিয়েছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে ক্যাম্পাসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই বার্ষিক সভা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চাপানউতোর বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রাখার জন্য পুলিশ বাহিনী সতর্ক রয়েছে। এই সভার সময়কার পরিস্থিতি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কি ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবিকে গুরুত্ব দেবেন, নাকি পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে, তা এখন দেখার বিষয়।

বাম ছাত্র সংগঠনগুলি জানিয়ে দিয়েছে যে তারা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায় না। তবে, তাদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন আরও জোরদার হতে পারে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের অশান্তি হলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।